রূপজান মণ্ডল
মেসের দরজাটা বন্ধ ছিল সকাল থেকেই। সহ-আবাসিকদের বার বার ধাক্কা, নাম ধরে ডাকাডাকি সত্ত্বেও সাড়া মেলেনি। শেষতক তাই পুলিশেই খবর দেওয়া হয়েছিল।
আর, পুলিশ এসে দরজা ভাঙতেই দেখা গিয়েছিল সব শেষ, গলায় শাড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলছে বছর কুড়ির উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রী রূপজান মন্ডল (১৯)। বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগণার বাসন্তী এলাকায় হলেও বহরমপুরের খাগড়ায় লিপিকা মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়াশুনা করত সে। পুলিশ তার সদ্য বিবাহিত স্বামী নাজিবুলকে জিজ্ঞাসাবাদও করছে।
নাজিবুল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। তবে সে যে মেডিক্যালের ছাত্র, কলেজ তা মানতে চায়নি। তাঁর বাড়িও রূপজানদের বাড়ির পাশের গ্রামে। পুলিশ জানাচ্ছে, ওই বিয়েতে আপত্তি ছিল রুপজানের বাড়ির। লুকিয়ে বিয়ে করে বহরমপুরে চলে আসার পরে অবশ্য রূপজানের পরিবার তা মেনেও নিয়েছিল। বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন বিশ্বাস বলছেন, “সুইসাইড নোটের বয়ান অনুযায়ী সম্পর্কের টানাপোড়েনের জের যে ছিল তা স্পষ্ট। মনে হচ্ছে তেমনই কোনও কারণে আত্মীঘাতী হয়েছে মেয়েটি।’’ তবে, ওই ঘটনার পরে, রুপজানের পরিবার এখনও নজিবুলের নামে কোনও অভিযোগ করেননি।
রুপজানের বাবা, রুহুল আমিন মন্ডল বাসন্তীতে আনাজের ব্যবসা করেন। রুহুল বলেন, ‘‘প্রতিবেশি নাজিবুল বড় ব্যবসায়ীর ছেলে। গত এপ্রিল মাসে ও আমার মেয়েকে বুঝিয়ে নিয়ে গিয়ে আমাদের অমতে বিয়ে করে। তার পর থেকে মেয়ের ওপর নাজিবুল ও তাদের বাড়ির লোকজন মেয়েকে অত্যাচার করত।’’ বহরমপুরে শহরের নিমতলায় আব্দুল মবিন হোসেনের বাড়ির তিনতলায় তিনটি ঘর মিলিয়ে একটি মেস করেছেন। অন্য মেস থেকে সাত মাস আগে মেয়েটি এসে সেখানেই থাকতে শুরু করেছিল কিছু দিন ধরে।
মেসের মালিক থেকে শুরু করে মেসের অন্যান্য আবাসিকেরা জানিয়েছে, গত এক সপ্তাহ ধরে, সে স্কুলে যাচ্ছিল না।