বহরমপুর হাসপাতালের আগুনের আঁচ পৌঁছল নদিয়াতেও।
রবিবার সাধারনত জেলা স্বাস্থ্য কর্তাদের পা পড়ে না সরকারি হাসপাতালগুলিতে। কিন্তু, এদিন পড়ল। অগ্নিকাণ্ডের মোকাবিলায় হাসপাতাল কতটা তৈরি, জেলা হাসাপাতালের দু’টি ক্যাম্পাস ঘুরে তা খতিয়ে দেখলেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হাসপাতালের সুপার ও জেলার অন্যান্য স্বাস্থ কর্তারা। শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল ঘুরে দেখেন রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি, বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের তুলনায় সদর হাসপাতাল ক্যাম্পাসের অবস্থা অনেকটাই নিরাপদ। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে আরও বেশ কিছু অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডারের (ফায়ার এক্সটিঙ্গুইজার) প্রয়োজন। আগুন লাগলে সেগুলি চালানোর প্রশিক্ষণ নেই হাসপাতালের কর্মীদের। সিদ্ধান্ত হয়েছে, চিকিৎসক, নার্স- অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীদের এই সিলিন্ডার চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শক্তিনগর জেলা হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ১৯৯২ সালের পুরনো ১৭টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে। সেগুলি বাতিল করার সুপারিশ করেছে পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ।
২০১৪ সালে সদর হাসাপাতাল ক্যাম্পাসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্র থেকে যে আগুন লাগার ঘটনার পর ১৫ দিন অন্তর সেগুলি পরীক্ষা করা হত। কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরে তা বন্ধ।
রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, “এই ধরণের বিষয় নিয়ে এমনিতেই রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই ধরণের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকি। তবে আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরকে বলব যাতে তারা নিয়তভাবে এসি মেশিনগুলির রক্ষনাবেক্ষনের বিষয়টি দেখেন।”
পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়র অমিত দাস বলেন, “জানিনা, কারা এই ধরণের কথা বলছেন। আমরা নিয়মিতই এসি মেশিন পরীক্ষা করি।”
ঠিক হয়েছে, হাসপাতাল গুলির অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিয়ে জেলার সমস্ত হাসপাতালের সুপার, সহকারী সুপার, মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক, দমকল বিভাগের সেফটি অফিসার ও পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়রের সঙ্গে বৈঠক করবেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় বলেন, “আমরা দমকলের সুপারিশের অপেক্ষায় রয়েছি। তাদের সুপারিশ মতই পদক্ষেপ করা হবে।”
দমকল বিভাগের কর্মী-আধিকারিকরা এদিন তারা জেলা হাসপাতালের দুটি ক্যাম্পাস শক্তিনগর ও সদর হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তারা জানিয়েছেন, এক সপ্তাহের মধ্যে তারা হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পত্র তুলে দেবেন।
রবিবার কর্তাদের হাসাপাতলে আসতে দেখে অবাক কর্মীরাই। তাঁদের একজনের মন্তব্য, ‘‘রবিবার তো কর্তাদের কেউ শহরেই থাকেন না। শনিবার হলেই তাঁরা শহর ছাড়েন। যা হোক, বহরমপুরের হাসপাতালের আগুনের তাপ তা হলে এখানেও পৌঁছল।’’