এ বার কাঁচির ঘা, ফের কর্মবিরতি আদালতে

শনিবার ডোমকল আদালতের আইনজীবী আব্দুল ওয়াদুদকে কাঁচি দিয়ে কুপিয়েছিল তাঁর মক্কেল সাইনুল শেখ। হামলার কারণ, ডাকাতির মামলায় অভিযুক্ত সাইনুলের জামিনের ব্যবস্থা করতে পারেননি ওই আইনজীবী। আব্দুলকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। আদালতে মামলার পাহাড় জমে থাকলেও এই অজুহাতে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে ফের।

Advertisement

 নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৮:২০
Share:

আশাবরী কাণ্ডের শুনানি হল না। ফিরে যাচ্ছে নিত্যানন্দ। নিজস্ব চিত্র

বয়সের ভারে ঝুঁকে গিয়েছে শরীরটা। হাতে লাঠি। বৃষ্টিভেজা রাস্তায় লাঠিতে ভর দিয়ে ডোমকল আদালত চত্বর থেকে বেরিয়ে আসছিলেন অশীতিপর বৃদ্ধা। চামড়া কুঁচকে গিয়েছে। বলিরেখা দীর্ণ সেই মুখেও বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট। দেওয়ানি মামলার শুনানি থাকায় ১০ কিলোমিটার পথ উজিয়ে সোমবার ডোমকল আদালতে এসেছিলেন। কিন্তু আইনজীবীদের কর্মবিরতির জেরে আদালতের কোনও কাজই হয়নি। হয়রান হয়ে তাই ফেরার পথে জানিয়ে গেলেন, ‘‘মগের মুলুক হয়ে গিয়েছে বাবা!’’

Advertisement

এ যদি হয় ডোমকল আদালতের ছবি তা হলে আসুন দেখি বহরমপুর আদালতে— আশাবরী আবাসনে তিন মহিলার খুনের মামলায় এ দিন তদন্তকারী অফিসারের সাক্ষ্যগ্রহণের কথা ছিল। কর্মবিরতির জেরে সেই শুনানিও হয়নি। সকাল ১১টা নাগাদ মামলার অভিযুক্ত নিত্যানন্দ দাসকে নিয়ে পুলিশের ভ্যান ঢুকল বটে আদালত চত্বরে, কিন্তু শেষতক ফিরেই গেল পুলিশের ভ্যান। জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলা হলেও আদালতের কাজকর্ম না হওয়ায় কিছুক্ষণ পর ফিরেই যেতে হল। কিন্তু কেন এই কর্মবিরতি?

শনিবার ডোমকল আদালতের আইনজীবী আব্দুল ওয়াদুদকে কাঁচি দিয়ে কুপিয়েছিল তাঁর মক্কেল সাইনুল শেখ। হামলার কারণ, ডাকাতির মামলায় অভিযুক্ত সাইনুলের জামিনের ব্যবস্থা করতে পারেননি ওই আইনজীবী। আব্দুলকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সোমবার কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

Advertisement

আদালতে মামলার পাহাড় জমে থাকলেও এই অজুহাতে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে ফের।

তবে, আইনজীবীদের এই কর্মবিরতি এবং তার জেরে আদালতের কাজ পণ্ড হওয়া সমর্থন করেননি আইনজীবীদের একাংশও।

সাধারণ মানুষের হয়রানির কথা মেনে নিলেও বহরমপুর বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবাশিস রায় কর্মবিরতির পক্ষেই সওয়াল করেছেন। বলেন, ‘‘আইনজীবীরা মক্কেলের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন। কিন্তু তাঁরা যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, তবে প্রতিবাদ তো হবেই। পাঁচ হাজার কেন, পাঁচ লক্ষ মামলা জমে থাকলেও, নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে কর্মবিরতি হবেই।’’ সে কর্মবিরতি চলবে আজ, মঙ্গলবারও বলে জানিয়েছে, বার অ্যাসোসিয়েশন। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য যে আরও হয়রানি অপেক্ষা করছে, তা মেনে নিচ্ছেন দুই আদালতের আইনজীবীদের একাংশও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন