Mani Karmakar

ছোট বাচ্চাদের রেখে ত্রাণের খোঁজেও যেতে পারছেন না মানি

লিয়াকত বাগানের এক কামরার খুপড়ি ঘরে ভাড়া থাকেন মানিরা। এতদিন পাঁচ জনের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেই সংসার চালিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বিদ্যুৎ মৈত্র

বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০৮:০৬
Share:

পরিচারিকা মানি কর্মকারের তিন সন্তান। নিজস্ব চিত্র

অন্যের বাড়ি পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। কিন্তু করোনা-আতঙ্কে সব বাড়ি থেকেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আপাতত কিছু দিন কাজে আসতে হবে না। তিন সন্তানকে নিয়ে অকুল পাথারে পড়েছেন বহরমপুরের লিয়াকত বাগানের মানি কর্মকার। আঁচলের খুঁটে চোখের জল মুছে বুধবার তিনি বললেন, ‘‘করোনা নিয়ে এই আতঙ্কের পরিবেশ কবে কাটবে জানি না। বাচ্চা ছেলেমেয়েগুলোকে দু’বেলা খাবার দিতে পারছি না। এ ভাবে কী বাঁচা যায়!’’

Advertisement

লিয়াকত বাগানের এক কামরার খুপড়ি ঘরে ভাড়া থাকেন মানিরা। এতদিন পাঁচ জনের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেই সংসার চালিয়েছেন তিনি। বাড়িতে ছোট ছোট তিন ছেলেমেয়ে।

তবে স্বামী সংসারের কোনও সাহায্য করে না বলে মানির অভিযোগ। তিনি জানান, মত্ত অবস্থায় তাঁর স্বামী তাঁকে মারধর করত বলে সন্তানদের নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে আসেন। তারপর এসে ওঠেন লিয়াকত বাগানের ওই ভাড়ার ঘরে। এদিন তিনি জানালেন, গত মাসে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করায় কাজের বাড়ি থেকে তাঁকে আপাতত কিছু দিন কাজে না যাওয়ার কথা বলা হয়। কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হলেও কেউ-ই আগাম টাকা দিয়ে তাঁকে সাহায্য করেননি বলে মানির অনুযোগ। কিন্তু রাজ্য সরকার তো বিপিএল তালিকাভুক্তদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছে। তা কি পেয়েছেন? মানি জানান, খড়গ্রামে তাঁদের বাড়ি। বহরমপুরের স্থায়ী বাসিন্দা না হওয়ায় তাঁর রেশন কার্ডও নেই। ফলে সরকারি ত্রাণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় তাকে। সে-ও এনে দেওয়ার লোক নেই। মানির কথায়, ‘‘বাড়িতে কোনও পুরুষ সদস্য নেই। এটুকু বাচ্চাদের একা রেখে কোথায় ত্রাণের চাল-ডাল আনতে ছুটব!’’

Advertisement

আরাতত কয়ক জন প্রতিবেশীর দেওয়া চাল-ডাল দিয়েই কোনওরকমে সন্তানদের মুখে ভাত তুলে দিতে পারছেন তিনি। তাঁর আশা, আর কয়েক দিন পর হয় তো এই সঙ্কট দূর হবে। ফের কাজে যেতে পারবেন তিনি। আর যদি তা না হয়? মানির উত্তর—‘‘রোগে মারা যাব না। তবে না খেতে পেয়ে মরতে হবে হয় তো!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন