মাংসের দোকানে নজর পুরসভার

বহরমপুরের নাগরিকদের অভিযোগ, মাংসের দোকানে শুধু কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে এমন নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোলা জায়গায় মাংস কেটে বিক্রি হচ্ছে। এক দিকে রাস্তার ধুলো উড়ে গিয়ে পড়ছে ওই কাটা মাংসের উপরে, অন্য দিকে দৃশ্য দূষণও হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বহরমপুর শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৮ ০৭:২০
Share:

ফাইল চিত্র।

মাছি তাড়াতে মাংসের গায়ে কীটনাশক ছড়ানোর ছবি প্রকাশ্যে আসতেই বহরমপুর পুরসভার বিরুদ্ধে নজরদারির অভাবের অভিযোগ উঠেছে। বহরমপুরের নাগরিকদের অভিযোগ, মাংসের দোকানে শুধু কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে এমন নয়, শহরের বিভিন্ন এলাকায় খোলা জায়গায় মাংস কেটে বিক্রি হচ্ছে। এক দিকে রাস্তার ধুলো উড়ে গিয়ে পড়ছে ওই কাটা মাংসের উপরে, অন্য দিকে দৃশ্য দূষণও হচ্ছে। তাঁদের দাবি, অস্বাস্থ্যকর মাংস আমাদের খেতে হচ্ছে, অন্য দিকে প্রকাশ্যে কাটা মাংস দেখে ছোটদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করা উচিত পুরসভা ও প্রশাসনের।

Advertisement

ওই ঘটনার পরে অবশ্য মাংস ঢেকে বিক্রি করার নির্দেশ জারি করেছে বহরমপুর পুরসভা। তবে কোনও কোনও ব্যবসায়ী নামমাত্র প্লাস্টিক দিয়ে এমন ভাবে ঘিরে রেখেছে যে, বাইরে থেকে কাটা মাংসের পুরোটাই দেখা যাচ্ছে। পুরসভার কর্তাদের দাবি, প্লাস্টিক নয় যেখানে মাংস ঝোলানো থাকবে তা ফাইবার দিয়ে ঘিরে রাখতে হবে। কোনও ব্যবসায়ী নির্দেশ অমান্য করলে পদক্ষেপ করা হবে। বহরমপুরের বাসিন্দা মহম্মদ হাসানুল্লা বলছেন, “মাংসের দোকানগুলির উপরে আরও নজরদারি বাড়ানো উচিত। রাস্তায় যে ভাবে ধুলো-বালি উড়ছে, তাও তো মাংসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে ঢুকছে।” নজরদারির অভাবের অভিযোগ অস্বীকার করেন বহরমপুরের উপ-পুরপ্রধান জয়ন্ত প্রামাণিক। তিনি বলছেন, “নজরদারি রয়েছে বলেই আমরা খুব দ্রুত ওই মাংসের দোকানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।” তাঁর দাবি, আমরা আগেই মাংস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে বলেছিলাম যে, খোলা জায়গায় মাংস রেখে বিক্রি করা যাবে না। যারা কথা শুনবেন না, এ বার থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মাংসের দোকানে মাছি-মশা তাড়াতে কয়েক দিন আগে কীটনাশক ব্যবহার করার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় হইচই শুরু হয় এবং তা নজরে আসতেই গত শনিবার বহরমপুর পুরসভা রানিবাগান মোড়ের একটি মাংসের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ ছাড়া ওই দোকানের মালিকের ভাই নবাব মিঞাকে ওই রাতেই গ্রেফতার করে বহরমপুর থানার পুলিশ। রবিবার ধৃত ব্যক্তিকে বহরমপুরে সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানায়, মাংসে কীটনাশক ছড়ানোর অভিযোগে এক জনকে গ্রেফতার করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।

Advertisement

উপ-পুরপ্রধান জানান, মাংসের দোকানের ট্রেড লাইসেন্সও বাতিল করা হয়েছে। ওই মালিকের সেখানে আরও একটি মাংসের দোকান আছে, সেটিরও লাইসেন্স বাতিল করা হয়। বহরমপুর পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে শহরে ৫৮টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত খাসির মাংসের দোকান আছে। সে সব দোকানে নজরদারি চালানো হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে। যে মাংসের দোকানে কীটনাশক স্প্রে করার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল সেই দোকানের মালিক টিঙ্কু মিঞা দাবি করেন, “মাংসে কীটনাশক স্প্রে করা হয়নি। মশা তাড়াতে স্প্রে করা হয়েছিল। সে ছবিই কেউ তুলেছিল।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন