ওড়নার ফাঁসে মৃত নার্স, ধন্দে পুলিশ

কেন এই ঘটনা ঘটল, তা অবশ্য রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। সুনন্দার বাপের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের বালুরঘাটে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

বহরমপুর শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৮
Share:

সুনন্দিতা সরকার। ফাইল চিত্র

গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মিলল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক নার্সের দেহ। মৃতার নাম সুনন্দিতা সরকার (৩৮)। বাড়ি বহরমপুর থানার রাধারঘাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গোয়ালজান এলাকায়। বুধবার সকালে বাড়িতেই তাঁর নিথর দেহ মেলে। বাড়ির লোকজন নামিয়ে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে নিয়ে তাঁকে ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়।

Advertisement

কেন এই ঘটনা ঘটল, তা অবশ্য রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। সুনন্দার বাপের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের বালুরঘাটে। গোয়ালজানের চাল ও ক্যাটারিং ব্যবসায়ী রঞ্জন সরকারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের এক মাত্র ছেলে রূপ অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। স্বামী-স্ত্রীতে বড়সড় অশান্তির খবর পাড়াপড়শি বা হাসপাতালের কারও কাছেই শোনা যায়নি। তবে দীর্ঘ সময় ফেসবুকে ব্যস্ত থাকা নিয়ে দু’জনের মন কষাকষি হচ্ছিল বলে একটি সূত্রে পুলিশ জেনেছে।

খবর পেয়ে সুনন্দিতার বাবা ও অন্য আত্মীয়-স্বজন বালুরঘাট থেকে বহরমপুরে চলে আসেন। তবে দেহ হাসপাতালের মর্গেই রয়েছে। রাতে হাসপাতাল থেকে দু’পক্ষই থানায় যান। পরে বহরমপুর থানার আইসি শৈলেন্দ্রনাথ বিশ্বাস জানান, ‘‘এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাইনি।’’ তবে মৃতার স্বামীকে থানায় ডেকে অনেক রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনার সময়ে রঞ্জন বাড়িতে ছিলেন না। ছেলেকে গৃহশিক্ষকের বাড়িতে দিয়ে বাজারে গিয়েছিলেন রঞ্জন। প্রতিবেশী তথা বহরমপুর পঞ্চায়েত সমিতির প্রাক্তন সিপিএম কর্মাধ্যক্ষ স্বপন দত্ত বলেন, ‘‘বাজারে রঞ্জনের সঙ্গে দেখা হয়েছিল আমার। কথাও হয়। তার পরে আমি বাড়ি চলে আসি। কিছু ক্ষণ পরে ফোন করে রঞ্জন জানায়, ‘‘ওর স্ত্রী গলায় ফাঁস দিয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে মৃত্যুর কথা জানতে পারি।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আগে বহরমপুর জেলা সদর হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন সুনন্দিতা। পরে জরুরি বিভাগের সিনিয়র নার্স হিসেবে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল চলে আসেন। উচ্চ রক্তচাপ ছিল। ছ’মাস আগে হৃদরোগে আক্রাম্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হন। হাসিখুশি স্বভাবের জন্য সহকর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয় ছিলেন সুনন্দিতা। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে সহকর্মীরা বাড়িতে, পরে হাসপাতালে পুলিশ মর্গে ভিড় করেন। অনেকেই কান্নাকাটি করতে থাকেন।

পড়শিরা জানান, গত ছ’মাসের মধ্যে এই নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হল রঞ্জনদের বাড়িতে। কয়েক মাস আগে রঞ্জনের বাবা রবি সরকার মারা যান। মাসখানেক আগে এক ভাই কার্তিক সরকার মারা যান মোটরবাইক দুর্ঘটনায়। এ দিন স্ত্রী গেলেন। রঞ্জনের এক ভাই রথীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘পারিবারিক কোনও বিবাদ ছিল না। কেন এমন ঘটল, বুঝতে পারছি না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন