আইন যখন ভাঙে খোদ পুলিশই। নিজস্ব চিত্র।
মুর্শিদাবাদ আছে মুর্শিদাবাদেই!
প্রচার, সচেতনতা, অনুরোধ, আইনি পদক্ষেপ— কোনও কিছুতেই মাথায় পরানো যাচ্ছে না হেলমেট। মুষ্টিমেয় কিছু লোকজন ছাড়া হেলমেট না পরেই বাইক ছোটাচ্ছেন লোকজন। সেই তালিকায় রয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে পুলিশকর্মী সকলেই।
হেলমেট না পরার মাসুল দিয়েছেন অনেকেই। মুর্শিদাবাদের দীর্ঘ সেই তালিকায় শেষ সংযোজন ধুলিয়ানের লালপুরের প্রশান্ত সিংহ (২২) ও লক্ষ্মী সিংহ (২৪)। শুক্রবার গভীর রাতে রতনপুরে পাকুড়-ধুলিয়ান রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন দু’জন। গুরুতর জখম হয়েছেন তাঁদের এক সঙ্গী। তিন জনের কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। ঘটনার পরে ওই তিন জনের পরিবারের আক্ষেপ, ‘‘মাথায় হেলমেট থাকলে এমন ঘটনা কিছুতেই ঘটত না।’’
কিন্তু শুক্রবারের ওই দুর্ঘটনার কথা জেনেও গত দু’দিনে ধুলিয়ান-সহ মুর্শিদাবাদের বহু এলাকায় হেলমেট-চিত্রের কোনও বদল ঘটেনি। মাঝে মধ্যেই জেলা জুড়ে ঘটা করে পালন করা ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি। অভিযোগ, সেই স্লোগান আটকে আছে স্লোগানেই। একই বাইকে কখনও তিন জন কখনও চার জন সওয়ার হচ্ছেন। বলাই বাহুল্য, কারও মাথায় হেলমেট নেই।
জেলা পুলিশও পেট্রোল পাম্পগুলিতে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ ফেস্টুন টাঙিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল হেলমেট না থাকলে যেন বাইক চালকদের পেট্রোল না দেওয়া হয়। কিছু দিন সকলেই নড়েচড়ে বসেছিল। কিন্তু মাস পেরোতেই যে কে সেই। পাম্পের ফেস্টুনের রং এখন চটে গিয়েছে। হেলমেট ছাড়াই পাম্পে মিলছে পেট্রোল।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, “রাস্তায় হেলমেট ছাড়া কাউকে বাইক চালাতে দেখলেই বাইক থামিয়ে তাদের বোঝাচ্ছি। রঘুনাথগঞ্জে গত কয়েক দিনে প্রায় দু’শো বাইক আটক করে কেস দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কাজ হচ্ছে না। মানুষ নিজে থেকে সচেতন না হলে ফল মেলা মুশকিল।’’
সুতির এক পাম্প মালিক কবুল করছেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ সব সময় মানা সম্ভব হচ্ছে না। সকলেই তো পরিচিত। ক’জনকে তেল না দিয়ে ফিরিয়ে দেব বলুন? প্রত্যেক পাম্পে একজন করে সিভিক ভলান্টিয়ার দিলে ওই নিয়ম মানা অনেকটাই সম্ভব হবে।”