ভাঙা এটিএম ঘিরে কৌতূহলীদের ভিড়। কৃষ্ণনগরের বৌবাজারে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
এটিএম মেশিন ভেঙে ফেলেছিল দুষ্কৃতীরা। কিন্তু ভল্ট ভাঙতে পারেনি। ফলে একটু জন্য খোওয়া যায়নি টাকা। কিন্তু শহরের এটিএম কাউন্টারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল বৃহস্পতিবার গভীর রাতের এই ঘটনা।
যে রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের এটিএমে ওই ঘটনা ঘটেছে তারা জানিয়েছে, ওই এলাকায় তাদের ১৮২টি এটিএম কাউন্টার আছে। তার মধ্যে একশোটির দায়িত্বে রয়েছে একটি বেসরকারি সংস্থা। তারা বেশিরভাগ এটিএমেই কোনও নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ করে না। বউবাজারের যে এটিএমের মেশিন ভাঙা হয়েছে সেখানেও কোনও নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না। রাতের বেলা বিনা পাহারার এটিএম সেন্টার কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্ন উঠছে। ব্যাঙ্কের এটিএম চ্যানেল ম্যানেজার কৌশিক মজুমদার জানিয়েছেন, ওই বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীর বিষয়টি নিয়ে তাঁরাও চিন্তাভাবনা করছেন।
যেখানে ঘটনা ঘটেছে সেটি স্টেশনে যাওয়ার প্রধান রাস্তা হওয়ায় সারারাত ধরে এই রাস্তা দিয়ে লোক যাতায়াত করে। তা ছাড়াও কোতোয়ালি থানার পুলিশকর্মীরা দু’টি মোটরবাইকে চড়ে শহরের এটিএম কাউন্টারগুলির উপরে নজরদারি চালান। এই রাস্তায় রাতে টহল দিতে দেখা যায় পুলিশের গাড়িও। তার পরও কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন অনেকেই। স্থানীয় ব্যবসায়ী কাজল ঘোষ বলছেন, “অনেক সময় রাতে আমরা টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরি না। দোকানের ভিতরেই রেখে যাই। এখন তো দেখছে সেটা করাও নিরাপদ হবে না। যারা এটিএম মেশিন ভেঙে ফেলে তাদের দোকানের তালা ভাঙতে কত ক্ষণ আর লাগবে!”
স্টেশনে যাওয়ার প্রধান রাস্তা ডি এল রায় রোডের ধারের ওই এটিএম কাউন্টারে মেশিন ভাঙার পাশাপাশি সিসি ক্যামেরা ও সিপিইউ খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। রাস্তার পাশেই বিদ্যুতের খুঁটিতে লাগানো আছে কৃষ্ণনগর পুরসভার সিসি ক্যামেরা। কিন্তু জেলা পুলিশের দাবি, ওই ক্যামেরাটি ক’দিন ধরেই অকেজো হয়ে আছে। অগত্যা পুলিশ কিছুটা দূরের একটি শপিং মলের সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে তা খতিয়ে দেখছে।
পুলিশের অনুমান, স্থানীয় দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত। এবং তারা এখনও তেমন পাকা হয়ে ওঠেনি। কারণ, অভিজ্ঞ দুষ্কৃতীরা জানে যে, এটিএমের ভল্ট ভাঙা অত্যন্ত কঠিন কাজ। আর স্থানীয় বলেই তারা জানত যে, পুরসভার সিসি ক্যামেরা খারাপ হয়ে আছে।