এ ভাবেই ফুটপাত দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি। শান্তিপুরে নিজস্ব চিত্র
শহরের সৌন্দর্যায়নের জন্য শান্তিপুর শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় তৈরি হচ্ছে ফুটপাথ। কিন্তু সেই ফুটপাথের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ফুটপাথে কোনও নিকাশির ব্যবস্থা না করায় বেশ কিছু জায়গায় জল জমতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ। যদিও পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ফুটপাথ সংলগ্ন এলাকায় ভূর্গভস্থ নিকাশি নালা তৈরি হচ্ছে।
গ্রিন সিটি প্রকল্পে শান্তিপুর শহরকে সাজিয়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই শান্তিপুর শহরে তৈরি হয়েছে ফুটপাথ। শান্তিপুরের ডাকঘর মোড়, কাশ্যপ পাড়া মোড়, পাবলিক লাইব্রেরি, কলেজের সামনের রাস্তা থেকে শুরু করে প্রায় স্টেশন পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ফুটপাথ তৈরির কাজ চলছে। রংবেরঙের নানা টাইলসে সাজছে এই সব ফুটপাথ।
এখনও ফুটপাথ তৈরির কাজ শেষ হয়নি। তার আগেই এই ফুটপাথ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ, ফুটপাথ তৈরি হলেও সেখানে নিকাশির জন্য কোনও ব্যবস্থা না থাকায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমনিতেই শান্তিপুর শহরে নিকাশির সমস্যা রয়েছে। এ বার ফুটপাথ তৈরি হয়েছে, কিন্তু সেখানে নিকাশি নালা তৈরি হয়নি বলে অভিযোগ। যে কারণে বৃষ্টি হলেই জমছে জল। সম্প্রতি ডাকঘর মোড় এলাকায় পুরসভার উদ্যান রবীন্দ্র কাননের কাছেই জল জমতে দেখা গিয়েছে।
ফুটপাথের সঙ্গেই নিকাশি নালা তৈরি হলে এই ধরনের সমস্যা হত না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। কাসারিপাড়ার বাসিন্দা, শান্তিপুরের পুরাতত্ত্ব গবেষক অমিতাভ মৈত্র বলছেন, “ফুটপাথের দরকার ছিল। তৈরি হচ্ছে, ভাল কথা। কিন্তু ফুটপাথের সঙ্গে ভূগর্ভস্থ নালা তৈরি করে, তা ঢালু করে পুরসভা সংলগ্ন জলাশয়ে নিয়ে গিয়ে ফেললে নিকাশি সমস্যার অনেকটাই সমাধান হত।”
ডাকঘর এলাকার ব্যবসায়ী অভিজিৎ বাগচী যেমনন বলেন, “ফুটপাথ তৈরির উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভাল। কিন্তু আমাদের এখানে নিকাশি নালা নেই। একটি কোনওরকম ছিল। সেখানেই ফুটপাথ হচ্ছে। নিকাশি নালার ব্যবস্থাও পাশাপাশি রাখলে এলাকার মানুষের সুবিধা হবে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, ডাকঘর মোড় ছাড়িয়েও জল জমে রাস্তায়। তবে পুরপ্রধান অজয় দে-র দাবি, “রবীন্দ্র কাননের কাছে জল জমার সমস্যা আছে। সেটা দূর করার জন্য আমরা ইতিমধ্যেই সেখানে ভূর্গভস্থ নিকাশি নালা তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি তৈরি হলে জল জমার সমস্যা দূর হবে।”
এর পাশাপাশি রয়েছে অন্য সমস্যা। বিভিন্ন জায়গায় ফুটপাথের উপরে রাখা হচ্ছে বাইক, সাইকেল এমনকি, চার চাকার যানও। ফলে, পথচারীদের ব্যবহারের জায়গা ক্রমশ সংকীর্ণ হচ্ছে। এর ফলে ফুটপাথ তৈরির আসল উদ্দেশ্যটিই ব্যাহত হবে বলেই মনে করছেন পুর নাগরিকদের একংাশ।