দেখলাম, হাউহাউ করে কাঁদছে খালাসি

ততক্ষণে আমার মত  অনেকেই বেরিয়ে এসেছে বাড়ি থেকে। দেখি ট্যাঙ্কারের চালক গাড়ির ভাঙা অংশে বীভৎস ভাবে আটকে রয়েছেন।  দু-তিন জন মিলে ওকেই বের করার চেষ্টা করি। পাশেই দেখি হাউ হাউ করে কাঁদছে খালাসি। আটক চালককে বের করতেই দেখি দু-পা ভাঙা। মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে।

Advertisement

মাঞ্জারুল শেখ

শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:২৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

তখনও ভোরের আলো ফোটেনি, ভাল করে ঘুম ভাঙেনি। জাতীয় সড়কের পাশেই বাড়ি। হঠাত লরির চাকা ফাটার মতো বিকট শব্দ। বড় কিছু বিপদ ঘটেছে তা কিন্তু ভাবিনি। শব্দ শুনে দেরি করিনি, বেরিয়েছিলাম। রাস্তার দিকে তাকাতেই দেখি দুমড়ে মুচড়ে দুটি গাড়ি রাস্তার উপর। লোকজনের চিৎকার, কান্নাকাটি। বাইরে আবছা আঁধার, সামান্য ঘোলাটে কুয়াশা। তখনই রাস্তায় ছুটে যাই।

Advertisement

ততক্ষণে আমার মত অনেকেই বেরিয়ে এসেছে বাড়ি থেকে। দেখি ট্যাঙ্কারের চালক গাড়ির ভাঙা অংশে বীভৎস ভাবে আটকে রয়েছেন। দু-তিন জন মিলে ওকেই বের করার চেষ্টা করি। পাশেই দেখি হাউ হাউ করে কাঁদছে খালাসি। আটক চালককে বের করতেই দেখি দু-পা ভাঙা। মাথা ফেটে রক্ত ঝরছে। অন্যরা তখন একটু দূরে মাঝে ডিভাইডারের উপরে বাসের সামনে। বাস থেকেও ততক্ষণে দু’জনকে বের করা হয়েছে। পুলিশ আসতেই গাড়িতে ট্যাঙ্কারের চালক ও বাসের দু’জনকে পাঠানো হল তারাপুর হাসপাতালে। তাদের সঙ্গে গেল খালাসিও। তার চোখে মুখে আতঙ্ক। দিন ছয়েক আগে এই প্রথম সে লরিতে খালাসি হিসেবে এসেছে। ততক্ষণে বাস থেকে বের করা হয়েছে জনা কয়েককে। বাসের চালক, কন্ডাক্টর, একটি বছর ১২ বয়সের মেয়ে, সংজ্ঞাহীন সকলেই। অনেকেই নিজেই বেরিয়ে এসেছে বাস থেকে। তাদের কারও হাত কেটেছে, কারও মাথা ফেটেছে। জনা ১২ হবে সব মিলিয়ে। পুলিশের ডাকে ঘটনাস্থলে এসেছে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স। তাতেই সকলকে পাঠানো হল বেনিয়াগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ট্যাঙ্কার থেকে তখন ডিজেল পড়ছে। পুলিশ একটি খালি ট্যাঙ্কার এনে কিছু ডিজেল খালি করে দিল যাতে বিপদ না ঘটে। কিন্তু তাতেও ট্যাঙ্কার থেকে ডিজেল পড়া আটকানো যায়নি।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শী, খয়রাকান্দির বাসিন্দা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন