School Uniform

প্যান্টের কাপড় দিয়ে জামা, জামার কাপড় দিয়ে প্যান্ট! ‘অবাক ইউনিফর্ম’ নিয়ে ক্ষুব্ধ নদিয়ার স্কুলের পড়ুয়ারা

পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য সাদা জামা, নীল রঙের গাউনের বরাত দেওয়া হয়েছিল। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য সালোয়ার-কামিজের বরাত দেওয়া হয়। ১৫০ জন পড়ুয়া পায় ‘উল্টো পোশাক’।

Advertisement

প্রণয় ঘোষ

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ১৮:২২
Share:

‘উল্টো ইউনিফর্ম’ পরেই স্কুলে আসছে পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।

শরীরের উপরের অংশের জন্য বরাদ্দ কাপড় দিয়ে তৈরি হয়েছে নিম্নাঙ্গের পোশাক। অর্থাৎ, জামার কাপড় দিয়ে প্যান্ট। আর প্যান্টের কাপড় দিয়ে তৈরি হয়েছে জামা। সেই ‘ইউনিফর্ম’ হাতে পেয়ে ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। কেউ কেউ গুছিয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়ে আর গায়ে তোলেনি ওই পোশাক। কেউ ‘উল্টো ইউনিফর্ম’ পরে আসছে স্কুলে। এ নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। নদিয়ার করিমপুরের একটি স্কুলের ঘটনায় রাগে গজরাচ্ছেন অভিভাবকেরা। অভিযোগ পেয়ে শীঘ্রই তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

Advertisement

নদিয়ার করিমপুর সেনপাড়া রাধারানি উচ্চ বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনার ব্যবস্থা রয়েছে। পড়ুয়ার সংখ্যা ৩৪৭। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য সাদা জামা আর নীল রঙের গাউনের বরাত দেওয়া হয়েছিল। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীদের জন্য সালোয়ার-কামিজের বরাত দেওয়া হয়। পোশাক তৈরি হওয়ার পরে দেখা গিয়েছে, ১৫০ জন পড়ুয়া পেয়েছে ‘উল্টো পোশাক’। যে কাপড় দিয়ে সালোয়ার বানানোর কথা, তা দিয়ে তৈরি হয়েছে কামিজ। আর কামিজের কাপড়ে তৈরি হয়েছে সালোয়ার। একই বিভ্রাট ঘটেছে ছাত্রদের ক্ষেত্রেও। তাদের জামার কাপড়ে তৈরি হয়েছে হাফ প্যান্ট। আর প্যান্টের কাপড়ে জামা। কী আর করা যায়! গোমড়া মুখে তা-ই পরেই স্কুলে আসছে ছাত্রছাত্রীরা। তবে বেশ কয়েক জন পড়ুয়া ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেছে। তারা আর ‘ভুল ইউনিফর্ম’ গায়ে তোলেনি। অন্য জামাকাপড় পরে স্কুলে আসছে। শৃঙ্খলাভঙ্গ হচ্ছে বুঝেও মুখে কিছু বলছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

টুয়া মণ্ডল নামে ওই স্কুলের এক শিক্ষিকা অবশ্য জানিয়েছেন, এই প্রথম নয়। আগেও এমন ভুল হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সেই ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কানে তুলেও সমাধান হয়নি। ওদিকে ইউনিফর্ম নিয়ে বার বার ক্ষোভপ্রকাশ করছে ছাত্রীরা। ক্ষোভ রয়েছে অভিভাবকদের মধ্যেও। সেটাই স্বাভাবিক।’’ ক্ষোভ যে কতটা, তা জানা গেল মলয় বিশ্বাস নামে এক অভিভাবকের কথায়, ‘‘সরকার যখন টাকা খরচ করে বাচ্চাদের ইউনিফর্ম দিচ্ছে, তখন সেগুলো যাতে ঠিকঠাক ব্যবহার করা যায়, সেটাও তো দেখা উচিত! এমন জামা-প্যান্ট দেওয়া হল যে, কেউ গায়ে তুলতে চাইছে না। তাতে লাভটা কী হল?’’

Advertisement

ক্ষোভের আঁচ পেয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ ব্যাখ্যায় জানিয়েছেন, বর্তমানে বিভিন্ন গোষ্ঠীকে (স্বনির্ভর) স্কুলের ইউনিফর্ম তৈরির বরাত দেওয়া হয়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নিম্নমানের পোশাক এবং কাপড় সরবরাহ করছে। করিমপুর-১ ব্লকের বিডিও দেবদত্ত চক্রবর্তী অবশ্য বলেছেন, ‘‘বিষয়টি সম্পর্কে আমি এখনও বিস্তারিত জানি না। তবে খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। কোনও ত্রুটি থাকলে অবশ্যই তা সুরাহার চেষ্টা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement