প্রতীকী ছবি
সারি হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য দফতরের অন্তর্কলহ ক্রমশ জটিল আকার নিচ্ছে।
এ বার গ্লোকালের সারি হাসপাতালের ‘লিয়াজোঁ অফিসার’ তথা জেলা যক্ষা আধিকারিকের বিরুদ্ধে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা।
বেশ কিছু দিন ধরেই সারি হাসপাতালের চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের সংঘাত শুরু চলছিল।
স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিযোগ ছিল, জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা অনেকেই প্রয়োজনমতো সারি হাসপাতালে যাচ্ছেন না। তাঁদের অনেকেই সন্দেহজনক রোগীদের সারিতে না পাঠিয়ে জেলা হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি করছেন বা রেফার করে দিচ্ছেন। উদাহরণ হিসাবে কর্তারা শান্তিপুরের বাগআঁচড়ার ন’মাসের এক শিশুর কথা বলেছেন। জেলাস্বাস্থ্যকর্তাদের নির্দেশ সত্ত্বেও ওই শিশুকে সারি হাসপাতালে না-পাঠিয়ে জেলা হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভেন্টিলেটারে ভর্তি রাখা হয়। পরে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে রেফার করা হয়। শেষ পর্যন্ত এই শিশুর রিপোর্ট পজেটিভ আসে। স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিযোগ, ইচ্ছে করে দায়িত্ব এড়াচ্ছেন সারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। সেটা রোগীর পক্ষে মারাত্মক হচ্ছে।
আবার জেলা হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিযোগ, করোনার কোনও লক্ষণ না থাকা সত্বেও গ্রামীণ, ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বহু রোগীকে সারিতে পাঠানো হচ্ছে। এমনকি একাধিক যক্ষা রোগীকেও করোনা-সন্দেহজনক বলে পাঠানো হয়েছে। হিট স্ট্রোক ও মৃগীর রোগীকেও সারিতে পাঠানো হয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগী না হওয়া সত্বেও তাকে ইনফ্লুয়েঞ্জা বলে সারি হাসপাতালে রেফার করে পাঠানো হয়েছে।
চিকিৎসকদের দাবি, সমস্যার সমাধানে তাঁরা গত সোমবার সুপারের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। সেই সময় সেখানে হাজির হন ডেপুটি সিএমওএইচ-৩ অতসী মন্ডল ও জেলা যক্ষ্মা আধিকারিক শুভাশিস চন্দ। শুভাশিসবাবু আবার সারি হাসপাতালের লিয়াজোঁ অফিসার।
চিকিৎসকদের অভিযোগ, এই বৈঠকে শুভাশিসবাবু সুপার ও অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে অপমানজনক ব্যবহার করেন। শুধু তাই নয়, তিনি নিজে মাস্ক পরেননি এবং অন্যদেরও মাস্ক দরকার নেই বলে জানান। ওই দিন রাতেই চিকিৎসকেরা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করে মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেন। পরে মঙ্গলবার লিখিত অভিযোগ জানান।
জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে শুভাশিসবাবু বলেন, “আমি গিয়ে দেখি, বৈঠকে পারস্পারিক দূরত্ব রক্ষা করে বসা হয়নি। সেটা বলি। তা ছাড়া আমরা যখন জানি যে, নিজেদের মধ্যে কেউ করোনায় অক্রান্ত না থাকলে মাস্ক পরার প্রয়োজন নেই তখন পরব কেন? আমি চিকিৎসকদের ভালর জন্যই কথাগুলো বলেছিলাম।”