বিয়ের ব্যবস্থা হয়েছিল আগেই। মাধ্যমিকের দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েচি বাড়িতে জানিয়েছিল মাধ্যমিকে বসার আগে সে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চায় না।
মাধ্যমিক উতরোতেই ফের বিয়ের বিয়ের ব্যবস্থা। সপ্তাহখানেক পরেই বিয়ের দিন। বাড়ির লোককে মুখ ফুটে আর বারণ করতে পারেনি সে। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ির পাশের একটি গাছে তার ঝুলন্ত দেহ মিলল কান্দির আনোখা গ্রামের একাদশ শ্রেণির নির্জলী বাগদি (১৭)। এমন হতবাক তার গোটা পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে আত্মঘাতী হয়েছে সে। শান্ত স্বভাবের ওই ছাত্রীর মৃত্যুতে শোকাহত সারা গ্রাম।
পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে বিয়ের ব্যবস্থা করায়, নির্জলী নিজেই রুখে দাঁড়িয়ে বলেছিল, “মাধ্যমিক পরীক্ষাটা আগে ভালো ভাবে দিই তারপরে বিয়ে।” পিছিয়ে এসেছিলেন তার বাবা আনন্দ বাগদি। ৫০শতাংশ নম্বর পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করে স্থানীয় বড়হা আচার্য্য রামেন্দ্র সুন্দর কন্যা বিদ্যাপীঠে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে।
এরই মধ্যে বীরভূমের সাঁইথিয়াতে বিয়ের ব্যবস্থা পাকা করে ফেলে তার পরিবার। ২৮ এপ্রিল তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়েতে যে তার মত নেই, নতুন করে সে কথা মা-বাবাকে বলার সাহস পায়নি মুখচোরা শান্ত স্বভাবের মেয়েটি। নির্জলীর এক আত্মীয়া জানান, একবার তার কথায় বিয়ে বন্ধ হয়েছিল। আবার একই কথা বললে কি প্রতিক্রিয়া হবে তা ভেবেই, হয়তো কিছু বলেনি সে। তার পরেই বৃহস্পতিবার তার দেহ মেলে।
মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার মা সরস্বতী বাগদি। তিনি বলেন, “বিয়েতে ইচ্ছে ছিলনা সেটা আমাকে একবার বলতে পারতো। তাহলে আমি বিয়ে দিতাম না।” বাবা আনন্দ বাগদি বলেন, “আমার তিন মেয়ের মধ্যে নির্জলী ছোট। দুই মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বিঘা দু’য়েক জমির উপর নির্ভর করে সংসার চালাই। সেখানে মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাব কী ভাবে? তাই বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলাম। এবার বিয়েতে আপত্তি করেনি ও। মত নেই জানলে ব্যবস্থা করতাম না।”