শান্তিপুরের বাসিন্দা বছর ত্রিশের উন্নতি বিশ্বাসের জন্ম থেকেই দু’টি জরায়ু।
দু’টি জরায়ু নিয়ে জন্মেছিলেন মহিলা। সেটা তাঁর জানা ছিল না। বিয়ের পর সন্তানের জন্য চেষ্টা করতে গিয়ে যখন একাধিক বার তাঁর গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট হয় তখন পরীক্ষায় এই ত্রুটি ধরা পড়ে। গত শুক্রবার জটিল অস্ত্রোপচারে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকেরা সেই দুই জরায়ুকে এক করতে সক্ষম হয়েছেন।
সামান্য অস্ত্রোপচারের জন্য জেলার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ বা হাসপাতালগুলি থেকে কলকাতায় রেফার করাই যেখানে অলিখিত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে দায়িত্ব নিয়ে কল্যাণী মেডিক্যাল এই ঝুঁকির অস্ত্রোপচার করে সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছে। রোগী এখন পুরোপুরি সুস্থ বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকেরা।
শান্তিপুরের বাসিন্দা বছর ত্রিশের উন্নতি বিশ্বাসের জন্ম থেকেই দু’টি জরায়ু। চিকিৎসকদের দাবি, এটি যথেষ্ট বিরল। শতকরা এক শতাংশেরও কম মহিলার ক্ষেত্রে এমন ঘটে। এর ফলে তিনি সন্তান ধারণ করতে পারছিলেন না। বিকল্প পদ্ধতিতে সন্তান ধারণের কথা ভেবেছিলেন বিশ্বাস দম্পতি। কিন্তু খরচের বহর শুনে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হন। কল্যাণীর এক নার্সিংহোমে ভর্তি হওয়ার পর সেখানে এইচএসজি নামে একটি পরীক্ষায় উন্নতিদেবীর দু’টি জরায়ুর কথা জানা যায়। এর পর তাঁরা জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজে যান। সেখানে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ মৃগাঙ্কমৌলি সাহার অধীনে চিকিৎসা শুরু হয়। গত শুক্রবার দুপুরে মৃগাঙ্কবাবুর নেতৃত্বে আট সদস্যের মেডিক্যাল টিম প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচার করে। বিশেষ ধরনের প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে উন্নতিদেবীর দু’টি জরায়ুকে একটি জরায়ুতে পরিণত করা হয়।
মৃগাঙ্কবাবু বলেন, ‘‘আমাদের প্লাস্টিক সার্জারির বিভাগ নেই। তা সত্ত্বেও আমরা এতটা ঝুঁকি নিয়ে এই রকম অস্ত্রোপচার জেলার মেডিক্যাল কলেজে করলাম। রেফার করে রোগীকে বিপদে ফেলা হয়নি।’’