ক্ষোভ: ধুলিয়ানে। নিজস্ব চিত্র
স্কুল চলাকালীন স্কুলের মধ্যে শিক্ষকদের একাংশ পিকনিক করেছিলেন। এমনই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখাল ছাত্রেরা। মঙ্গলবার ধুলিয়ানের কাঞ্চনতলা জেডিজে ইনস্টিটিউশনের ঘটনা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার কয়েক জন শিক্ষক স্কুলের ঘরে পিকনিক করেছেন। মেনু ছিল মাংস ও বিরিয়ানি। ক্লাস চলার সময় স্কুলের মধ্যে শিক্ষকদের পিকনিক নিয়েই এ দিন ক্ষোভ ছড়ায় ছাত্রদের মধ্যে।
শতবর্ষ প্রাচীন ওই উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে প্রায় ৫৫ জন শিক্ষক আছেন। ছাত্র সংখ্যাও পাঁচ হাজারের উপরে। এ দিনের ছাত্র বিক্ষোভে শিকেয় ওঠে পঠন-পাঠন। দুপুরে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ধুলিয়ান চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক আমজাদ আলি। গন্ডগোলের খবর পেয়ে স্কুলে ছুটে আসে শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশও।
বিক্ষোভকারী ছাত্রদের মধ্যে থেকে পাঁচ ছাত্রকেও ডেকে নেওয়া হয় এ দিনের বৈঠকে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফায়জুদ্দিন বিশ্বাসও কবুল করছেন, ‘‘বৃহস্পতিবার স্কুলের মধ্যে যে ১২ জন শিক্ষক পিকনিক করেছেন। আমিও সেখানে ছিলাম। এ দিনের বৈঠকে অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক ১২ জন শিক্ষককেই শো-কজ করা হবে বলে জানিয়েছেন।’’ ভেঙে দেওয়া হয়েছে স্কুলের অ্যাকাডেমিক ও স্টাফ কাউন্সিলও। কারণ, অভিযুক্ত ১২ জন শিক্ষকের মধ্যেই রয়েছেন স্টাফ ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরাও। আজ, বুধবার স্কুলে বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। স্থগিত রাখা হয়েছে সেই অনুষ্ঠানও।
ছাত্রদের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার স্কুল চলাকালীন স্কুলের পরীক্ষাগারে পিকনিকের আয়োজন করেন ওই শিক্ষকেরা। সেখানে ছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও। দরজা বন্ধ করে এই পিকনিক চললেও স্কুলের অন্য শিক্ষকেরা তা জানতে পেরে সেদিনই স্কুলের মধ্যে হইচই শুরু করেন। শিক্ষক ও অভিভাবকদের একাংশ ধুলিয়ানের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। মঙ্গলবার স্কুলে যান অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক। তিনি স্কুলে পা রাখতেই এক দল বহিরাগত প্রাক্তন ছাত্র স্কুলে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিক্ষোভ দেখে ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে আসে স্কুলের বর্তমান পড়ুয়ারাও।
অভিযোগ, এ বারই প্রথম নয়, মাঝেমধ্যেই স্কুলে এ রকম পিকনিক করেন শিক্ষকেরা। বেশিরভাগ দিন ক্লাস হয় না। এমনকি এক ছাত্রীকে অশালীন মেসেজও পাঠাচ্ছেন এক শিক্ষক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফায়জুদ্দিন বিশ্বাসও বলেন, “এক ছাত্রীকে মোবাইলে অশালীন মেসেজ পাঠাবার যে অভিযোগ ছাত্ররা তুলেছে তার তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক আমজাদ আলি বলেন, “শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে সবার কথা শুনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত ঘটনা জানানো হচ্ছে শিক্ষা দফতরের কর্তাদের। তার আগে স্কুলের অ্যাকাডেমিক ও স্টাফ কাউন্সিল এ দিনই ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”