রাসের প্রস্তুতি। সোমবার করিমপুরের মানিকপুরে। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক
নবদ্বীপের রাসের কার্নিভালে যোগ দিলে রাসের মূল আড়ংয়ে যোগ দেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় ছিল প্রথম থেকেই। শোনা যাচ্ছিল নানা মতামত। নবদ্বীপ পুরসভায় অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক সভা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিল। বৃহস্পতিবারের ওই সভায় পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, কার্নিভালে যাঁরা যোগ দেবেন, তাঁরা রাসের আড়ংয়ের শোভাযাত্রায় যোগ দিতে পারবেন না।
বলাই বাহুল্য, এমন সিদ্ধান্তে খুশি নন রাসের উদ্যোক্তাদের একটা বড় অংশ। পুরপ্রধানের সভাপতিত্বে সে দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন সমস্ত বারোয়ারি ও প্রশাসনের কর্তারা। আগামী ৫ নভেম্বর, রবিবার নবদ্বীপের রাসের আড়ং। এক দিন পরে ৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার প্রথম বার নবদ্বীপের রাসে অনুষ্ঠিত হয়ে চলেছে কার্নিভাল। সেক্ষেত্রে নবদ্বীপের রাসের অন্যতম আকর্ষণ আড়ং বা শোভাযাত্রায় বের হওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই সংশয় ছিল অনেকের। দুপুরের ওই সভাও এই বিষয়ে দু’টি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। কিন্তু সভায় উপস্থিত বেশিরভাগ উদ্যোক্তা মতামত দেন, কার্নিভালে যোগ দিলে আড়ংয়ে যোগ দেওয়া যাবে না। তার পরে সেই মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরে অনেক বারোয়ারির তরুণ সদস্যেরা এই সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁদের কথায়, ‘‘নবদ্বীপে র রাসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ প্রায় সাড়ে পাঁচ কিমি চক্রপথে প্রতিমা নিয়ে শোভাযাত্রা করা। রাস পূর্ণিমার পরের দিন সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলা এই শোভাযাত্রাই স্থানীয় ভাবে আড়ং নামে পরিচিত। তাতে যোগ না দিতে পারলে তো রাসের অর্ধেক আনন্দই মাটি।’’ এমন সদস্যদের বোঝাতে বিভিন্ন বারোয়ারির কর্তাদের আলাদা ভাবে আলোচনায় বসতে হয়।
নবদ্বীপে ছোটবড় মিলিয়ে রাসের প্রতিমার সংখ্যা চারশোর কাছাকাছি। যদিও অনুমতিপ্রাপ্ত প্রতিমার সংখ্যা তিনশোর নীচে। রাসে বারো-তেরো হাত উচ্চতার প্রতিমা যেমন হয় তেমনই হয় পঁচিশ থেকে তিরিশ হাত উচ্চতার প্রতিমাও। সাড়ে পাঁচ কিমি চক্রপথে বিশেষ ধরনের লোহার গাড়িতে আলোকসজ্জা সজ্জিত ঘূর্ণায়মান বিরাটাকার প্রতিমার আড়ং নবদ্বীপের রাসের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ।
সেই আড়ং থেকে বঞ্চিত হয়ে মুখভার কার্নিভালের যোগ দেওয়া পুজো কর্তাদের। নবদ্বীপের পুরপ্রধান বিমানকৃষ্ণ সাহাও জানিয়েছেন, কার্নিভালে যোগ দিলে আড়ংয়ে অংশগ্রহণ করা যাবে না।