অবরোধ: প্রধানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে রাস্তা অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মন কষাকষিটা নতুন নয়। চোরাগোপ্তা হাতাহাতির সঙ্গেও পরিচয় রয়েছে রঘুনাথগঞ্জের বাসিন্দাদের। তা বলে একটা সাইকেল রাখা নিয়ে যে এমন ধুন্ধুমার বেধে যাবে— মঙ্গলবার সকালে তা আঁচ করতে পারেননি শহরের মানুষ। যার জেরে এ দিন সাত সকাল থেকে শেষ বিকেল পর্যন্ত তপ্ত হয়ে থাকল শহরের রাস্তাঘাট।
পথ অবরোধ করে উঠল মন্ত্রী জাকির হোসেনের মন্ত্রীত্ব থেকে অপসারনের দাবি এবং ফের গণ্ডগোলের আশঙ্কা জিইয়ে রইল রাতেও। ওই ঘটনার জেরে, জাকির-অনুগত তৃণমূলের এক নেতাকে মারধরের অভিযোগে রঘুনাথগঞ্জ এক নম্বর ব্লকের দফরপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মঞ্জুর আলিকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।
তবে, তার পরেই মঞ্জুরের অনুগামীরা দলীয় পতাকা নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তোলেন শহর জুড়ে। অভিযোগ, মন্ত্রী জাকিরের নির্দেশেই পুলিশ মঞ্জুরকে গ্রেফতার করেছে।
মঞ্জুর, একদা দলের ব্লক সভাপতি ছিলেন। পরে দলের পর্যবেক্ষক হন তিনি। জাকিরের সঙ্গে তাঁর বিরোধের সূত্রপাত, বিধানসভার প্রার্থী বাছাই পর্ব থেকে। দলের অন্দরের খবর, বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পরে পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে মঞ্জুরকে সরানোর চেষ্টা করেন জাকির। জাকির তা মানতে না চাইলেও বিরোধটা প্রকাশ্যে আসে তার পর থেকেই।
মঞ্জুর এর পর থেকেই প্রকাশ্যেই জাকির বিরোধী কথা বলতে থাকেন।
এ দিন ঘটনার শুরু সকালে। ভাগীরথী সেতুর নিচে টুকটুক স্ট্যান্ডে নিজের গাড়িতে উঠতে যাচ্ছিলেন মঞ্জুর আলি। তখন পাশেই একটি দোকানের সামনে সাইকেল রেখে গিয়েছিলেন এক যুবক। ফলে প্রধানের গাড়িটি সরানোর জায়গা ছিল না। কেন সাইকেল রাখা হয়েছে— বচসা বেধে যায় তা নিয়ে। অভিযোগস ম়্জুর হাত তুলতেই পাল্টা মারধর করে ওই যুবক। তখনই নিজের দোকান থেকে নেমে তৃণমূলের সংখ্যালঘু শাখার সভাপতি মহম্মদ আলি বাধা দিতে যান। হাতাহাতিতে এ বার জড়িয়ে পড়েন তিনিও। অভিযোগ, এই সময়ে মঞ্জুরের মারে মাথা ফাটে। স্থানীয় লোকজনের হস্তক্ষেপে গোলমাল থামে বটে তবে, মহম্মদ আলিকে ভর্তি করানো হয় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরে পুলিশ মঞ্জুর আলিকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ দিন বিকেলেই শহরে দলের পতাকা নিয়ে মিছিল বের করেন মঞ্জুরের অনুগত তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। তাদের অভিযোগ, মন্ত্রী জাকির হোসেনের কথা মতোই পুলিশ মঞ্জুরকে গ্রেফতার করেছে। রঘুনাথগঞ্জ থানা ঘেরাও হতে পারে আশঙ্কায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয় থানায়। পুলিশ ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধে স্লোগান উঠতে থাকলে হইচই শুরু হয়ে যায় শহর জুড়ে। তবে,
জাকির বলেন, “মঞ্জুরের সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই। ওরা সবাই সিপিএমের লোকজন।”