সিন্ডিকেট রাজের ছায়া লালবাগেও

সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য এবং অভিযুক্ত ফের তৃণমূল। রাজারহাটের ছায়ায় মুখ পুড়িয়ে অভিযুক্তদের ডেকে সতর্ক করেছিলেন দলনেত্রী। শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেও বার্তা দিয়েছেন, ‘‘হয় সিন্ডিকেট করতে হবে, না হয় দল।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লালবাগ শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ০২:০৬
Share:

সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য এবং অভিযুক্ত ফের তৃণমূল।

Advertisement

রাজারহাটের ছায়ায় মুখ পুড়িয়ে অভিযুক্তদের ডেকে সতর্ক করেছিলেন দলনেত্রী। শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেও বার্তা দিয়েছেন, ‘‘হয় সিন্ডিকেট করতে হবে, না হয় দল।’’ সে হুঁশিয়ারি যে প্রান্তিক জেলার আনাচ কানাচে তেমন মান্যতা পায়নি, লালবাগ শহর তৃণমূল সভাপতি রাসু মণ্ডলের সিন্ডিকেট-দাপট তা স্পষ্ট করে দিল ফের।

যা শুধু অস্বস্তি নয়, জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের কথায়, ‘‘দিদির কথা অমান্য করা আমাদেরও মুখ পুড়ল।’’

Advertisement

অভিযোগ, লালবাগে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের ফলে প্রায় ৩ কোটি টাকার একটি সরকারি প্রকল্প শুরুর মুখেই মুখ থুবড়ে পড়তে চলেছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় ১৬ জন ঠিকাদার। তাঁদের অভিযোগের তালিকায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসনও।

ওই ঠিকাদারেরা জানান, কখনও ই-মেলে মারফত কখনও বা ফোন করে এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়েও মহকুমা প্রশাসনের কাছে সুরাহা পাননি তাঁরা।

লালগোলার ১১টি, এবং ভগবানগোলা ও মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের একটি করে, ১৩টি সমাধিক্ষেত্রের পাঁচিল দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘু দফতর থেকে ঠিকাদার নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় মহকুমাশাসককে।

সংখ্যালঘু দফতরের জেলা আধিকারিক সৌমেন দত্ত বলেন, ‘‘সেই টেন্ডার নিয়েই গণ্ডগোল।’’

এই টেন্ডার ডাকার পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ওই ঠিকাদারেরা। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘ওই গণ্ডগোলের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের মাথারাও রয়েছেন। না হলে প্রতি পদে আমাদের এমন বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে কেন, কেনই বা বরাত পাচ্ছেন শাসক দলের পছন্দের লোকেরা!’’

তাঁদের সন্দেহ, রাসু মণ্ডল এবং তাঁর সিন্ডিকেটের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনেরও কেউ কেউ জড়িত। তাঁদের দাবি, ‘পিছন দিয়ে’ কাউকে কাজের বরাত পাইয়ে দিতেই প্রশাসনের একাংশের ওই ছলচাতুরি।

এ ব্যাপারে মহকুমাশাসককে তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক। তবে টেন্ডার নিয়ে তেমন কোনও বড় গম্ডগোল তাঁর জানা নেই বলেই দাবি মহকুমাশাসক প্রবীর চট্টোপাধ্যায়ের।

লালগোলার ঠিকাদার প্রদীপ ভৌমিক বলেন, ‘‘সরকারি কর্মীদের বের করে দিয়ে টেন্ডার কারা পাবেন তা নিয়ন্ত্রণ করেছেন সিন্ডিকেটের সশস্ত্র পাণ্ডারা।’’

তাঁরা জানান, ওই এলাকায় তৃণমূল নেতা রাসু মণ্ডলই শেষ কথা। তাঁর সিন্ডিকেটের দাপটে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে টেন্ডার জমা দেওয়াই সম্ভব নয়। রাসু মণ্ডল অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধ ওঠা কোনও অভিযোগই মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘সিন্ডিকেট মানেই তৃণূলের কাউকে জড়িয়ে দেওয়া একটা রেওয়াজ হয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন