প্রতীকী চিত্র।
মুখ ফিরিয়েছে নিজের দল। তাই গ্রাম পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় বাজেট পাশ করাতে বিজেপির হাত ধরলেন তৃণমূলের প্রধান। সাগরদিঘির বালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে বুধবারের এই নয়া সমীকরণে স্থানীয় রাজনীতি রীতিমত সরগরম হয়ে উঠেছে।তৃণমূল সূত্রে খবর, দীর্ঘ দিন ধরে সাগরদিঘিতে তৃণমূল বিধায়ক সুব্রত সাহার গোষ্ঠীর সঙ্গে দলেরই পঞ্চায়েত সভাপতি ও প্রধানদের যে গোষ্ঠীবিবাদ চলছে, এটা তারই পরিণতি। পঞ্চায়েত কর্তারা বিধায়ক সুব্রত সাহার বিরুদ্ধে খোদ দলনেত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ করায় সাগরদিঘিতে তৃণমূলে গোষ্ঠী আরও চরম আকার নিল বালিয়ার ঘটনায়।
১৭ সদস্যের ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে বর্তমানে তৃণমূলের সদস্য রয়েছেন ১১ জন এবং বিজেপির ৬ জন। পঞ্চায়েত সমিতির ৩ সদস্যের ২ জন তৃণমূলের ও ১ জন বিজেপির।বুধবার বাজেট পাশের সাধারণ সভায় এই ২০ জন সদস্যের মধ্যে প্রধান ছাড়া তৃণমূলের ১০ সদস্যই উপস্থিত হননি। তাই শেষ পর্যন্ত পঞ্চায়েত সমিতির ৩ সদস্য সহ বিজেপির ৬ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের হাত ধরে পঞ্চায়েতের বার্ষিক বাজেট পাশ করালেন তৃণমূল প্রধান। এলাকায় রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি বিজেপিতে পা বাড়াচ্ছেন তৃণমূল প্রধান?
প্রধান কেতাবুদ্দিন শেখ বলছেন, ‘‘বিজেপিতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন কর্মসূচিকে ভেস্তে দিতে চাইছেন তৃণমূলের সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহার অনুগত সদস্যরা। সেই জন্যই বালিয়া পঞ্চায়েতের বাজেট সভাকেও ভেস্তে দিতে চেয়েছেন। গত সপ্তাহে বিধায়কের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। আমি যেহেতু তাদের সঙ্গে আছি তারই বদলা নিতেই এটা করা হয়েছে।’’ তবে বিধায়ক সুব্রত সাহার সাফ জবাব, ‘‘এ সব ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। যা বলার পঞ্চায়েত সদস্যরাই বলবেন।’’
তৃণমূল সদস্য বিমল দাসের দাবি, ‘‘প্রধান দলের কারও কথা শোনেন না। বাজেট পিছোতে বলা হয়েছিল। শোনেননি। আমরাও তাই যাইনি।’’প্রধান কেতাবুদ্দিন জানান, প্রশাসনের নির্দেশ ছিল পুজোর ছুটির আগে সাধারণ সভা ডেকে বাজেট পাশ করাতে না পারলে পঞ্চায়েতের সব উন্নয়ন আটকে যাবে। বিরোধী হলেও বিজেপির সদস্যরা এটা বুঝেই বাজেট পাস করাতে সাহায্য করেছেন। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তিনি জানান, বারবার দলের সদস্যদের বলা হয়েছিল, কবে বাজেট সভা হবে। তাঁরা আসেননি। ওই পঞ্চায়েতে বিজেপির দলনেতা উত্তম গাসের কথায়, ‘‘উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যাবে বলেই আমরা তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছি।’’ ব্লক অফিস সূত্রে অবশ্য জানানো হয়, সাধারণ সভার মোট সদস্যের অর্ধেক উপস্থিত থাকলেই সে সভা বৈধ। পঞ্চায়েতে একবার বাজেট পাশ হয়ে গেলে দ্বিতীয় বার আর পাল্টা বাজেট সভা করা যায় না।