বন্ধ-চিত্র: সাটুইয়ে পুলিশ ও বন্ধ সমর্থকদের লড়াই। ছবি: গৌতম প্রামাণিক ও অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
দাড়িভিটায় গুলিতে ছাত্র-মৃত্যুর সুতোয় জড়িয়ে গেল মুর্শিদাবাদের সাটুই।
ইসলামপুরের ওই ঘটনায় বিজেপি’র বনধে লাঠি-বোমার রণহুঙ্কার শুরু হওয়ার মুখে, নাবালক ঔৎসুক্য নিয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্র। অভিযোগ, পুলিশের ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাসের সেলের ঘায়ে আহত সেই ছাত্র রাকেশ নন্দী গুরুতর জখম হয়। আহত হয়েছেন তার দাদুও। এ দিন, নিরুত্তাপ বনধে এক মাত্র সাটুই-ই মুর্সিদাবাদে কিঞ্চিৎ উষ্ণতা ছড়িয়েছে।
বুধবার সকালে, সাটুই এলাকায় বনধের সমর্থকেরা পথ অবরোধ করলে অবরোধ তোলার সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে য়ায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় পুলিশের ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাসের সেলের আঘাতে জখম হয় রাকেশ। তাকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার দাদু অধীর বিশ্বাসকে শক্তিপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাকেশ বলে, ‘‘টিউশন পড়ে বাডি ফেরার সময় গণ্ডগোলের মধ্যে পড়ে যাই।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি গৌরীশঙ্কর রায় বলেন, ‘‘ওই দু’ জন পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে জখম হয়েছেন।’’ জেলাশাসক পি উলগানাথন পুলিশের গুলি ছোড়া, বা কাঁদানো গ্যাসের সেল ফাটানোর কথা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সাটুই-এ সামন্য একটি ঘটনা ঘটেছিল। পুলিশ গিয়ে সামলে নিয়েছে।’’
কাঁদানে গ্যাসের সেলে জখম কিশোর। ছবি: গৌতম প্রামাণিক ও অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
এ দিন জেলায় মোট ১৯ জন বনধ সমর্থককে পুলিশ গ্রেফতার করে। বহরমপুর শহর, লালবাগ শহর ও জিয়াগঞ্জ শহরে বনধে মিশ্র সাড়া পড়লেও কান্দি, রঘুনাথগঞ্জ, বেলডাঙা, ডোমকল লালগোলার মতো শহরে বনধে সাড়া মেলেনি। ট্রেন চলায় রেলযাত্রীরা বনধের আঁচ পড়েনি। এ দিন পথে না নামায় ভোগান্তি হয়েছে বেসরকারি বাসযাত্রীদের। বেসরকারি বাস মালিক সমিতির কর্তা রথীন মণ্ডল বলেন, ‘‘সকালে যাত্রী থাকায় কিছু বাস চলেছিল। সকালে ১১টার পরে যাত্রী না পাওয়ায় রুট থেকে বাস তুলে নেওয়া হয়।’’ স্কুল-কলেজ খোলা থাকলেও পড়ুয়াদের হাজিরা ছিল নাম মাত্র। অফিস-আদালতে সরকারি কর্মীদের হাজিরা ছিল প্রায় ৯৯ শতাংশ। তবে পরিষেবা নিতে সরকারি অফিসে সাধারণ মানুষের ভিড় ছিল না। বেসরকারি বাস ও ট্রেকার না চললেও বহরমপুর শহরে টোটো চলেছে যথারীতি।
উত্তর মুর্শিদাবাদ জেলার কোথাও সেভাবে পথে নামতে দেখা যায়নি বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের। সুতিতে বহু অফিস ও ব্যাঙ্কের সামনে দলীয় পতাকা হাতে দু’চার জন করে বিজেপি কর্মীকে দাঁড়িয়ে সেলফিও তুলতে দেখা যায়।