খুন না দুর্ঘটনা, ধন্দে পুলিশ

নর্দমা থেকে মহিলার দেহ উদ্ধার

কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণিতে বনলতা দেবীর বাড়ির পাশের গলিতেই তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি। কালীপুজোর রাতে সেখান থেকেই বেরিয়ে ছিলেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২২
Share:

মৃত বনলতা দত্ত।—নিজস্ব চিত্র।

‘আসছি’ বলে বেরিয়ে আর ফেরেননি তিনি। সারা রাত ধরে খোঁজাখুঁজির পরেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। শুক্রবার সকালে বনলতা দত্তের (৪১) খোঁজ মিলল বাড়ির হাত কয়েকের মধ্যেই খোলা নর্দমার মধ্যে।

Advertisement

খুন? নাকি নর্দমায় পড়ে নিছকই দুর্ঘটনা? স্পষ্ট হয়নি কিছুই। এমনকী ধন্দ কাটাতে পারেনি পুলিশও—তারা ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায়।

কৃষ্ণনগরের ঘূর্ণিতে বনলতা দেবীর বাড়ির পাশের গলিতেই তাঁর আত্মীয়ের বাড়ি। কালীপুজোর রাতে সেখান থেকেই বেরিয়ে ছিলেন তিনি। এই সামান্য দূরত্ব ভাঙতে ওই নালায় পড়লেন কী করে, তা পরিষ্কার করতে পারেননি বাসিন্দারাও। তবে, জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, রাতের অন্ধকারে কোন ভাবে নর্দমায় পড়ে গিয়েই মারা গিয়েছেন ওই মহিলা।’’ নদিয়া জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া অবশ্য বলেছেন, “আগে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাই, না হলে আন্দাজে কিছু বলা ঠিক হবে না।’’

Advertisement

পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বনলতার স্বামী কাজল ছিলেন বাস চালক। বছর আটেক আগে তিনি মোটর বাইক দূর্ঘটনায় মারা যান। অভাবের সঙ্গে লড়াই করে সংসার টানছিলেন ওই মহিলা। ছেলে সৌরভ বি এ পাশ করে বেকার। মাঝে মধ্যে ক্যাটারিং-এ কাজ করে।

প্রতিবেশী প্রদীপ কুণ্ডু বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরে মানুষটাকে দেখছি। কী অসম্ভব লড়াই করে তিনি সংসারটা টানছিলেন। এমন মৃত্যুর কোনও কারণই খুঁজে পাচ্ছি না।”

তবে, পুলিশ বনলতার মৃত্যুর পিছনে দুর্ঘটনা দেখলেও কাজলবাবুর দাদা নারায়ণ দত্ত বলেন, “বড্ড খটকা লাগছে। ওই রাস্তা দিয়ে বৌমা প্রতি দিন একাধিক বার যাতায়াত করত। চেনা রাস্তা। রাস্তায় আলোও আছে। কী করে পড়ে যাবে!’’ রাস্তার পাশে ওই নর্দমাটিও বেশ সরু। ফুট দেড়েক গভীরতার ওই নর্দমায় পড়লে চোট লাগতে পারে, মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করছেন তিনি।

এ ছাড়াও, বৃহস্পতিবার রাতে সকলে মিলে খোঁজার সময়েও কেউ ওই নর্দমায় কাউকে পড়ে থাকতে দেখেননি। প্রতিবেশীদের এক জনের কথায়, ‘‘ওই এক ফালি নর্দমায় কেউ পড়ে থাকলে আমরা দেখতে পাব না, তাই কখনও হয়!’’

পুলিশ জানিয়েছে মহিলার মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে, শরীরে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। তাঁর মোবাইল ফোনও উদ্ধার হয়েছে মুঠোয় ধরা অবস্থায়। তা হলে?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন