বিধানসভার পরিষদীয় সচিব চাঁদ মহম্মদের আপ্ত সহায়ক আবু সায়েমের বিরুদ্ধে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাত্ করার অভিযোগ উঠেছে।
গত ৩ জুলাই ভগবানগোলা থানায় ওই মর্মে একটি অভিযোগও দায়ের হয়েছে। ভগবানগোলা থানার পুলিশ প্রথমে ওই অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে বলেও অভিযোগ। পরে অবশ্য অভিযোগ জমা নিলেও এখন পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই বিষয়ে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি অর্থলগ্নি সংস্থার ডিরেক্টর পদে ছিলেন ভগবানগোলার বাসিন্দা আবু সায়েম। ওই সংস্থার অধীনে মুর্শিদাবাদ জেলায় কয়েক হাজার এজেন্ট ছিল। তার মধ্যে ভগবানগোলায় ছিল প্রায় সাড়ে তিনশো জন। ওই সংস্থার এজেন্ট হিসেবে ভগবানগোলায় কাজ করতেন কওসর আলি। তিনি গত ৩ জুলাই ভগবানগোলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, “ আমানতকারীদের জমা দেওয়া কয়েক কোটি টাকা আবু সায়েম আত্মসাত্ করেছে। এখন টাকা চাইতে গেলেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।”
ভগবানগোলা থানার চরবাণীপাড়ার কওসর আলির পাওনা টাকা ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, কান্তনগরের ডালিম শেখ জমা দেন প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা। তালিকায় রয়েছেন আরও অনেকে। কিন্তু সারদা কাণ্ডের পরে ভগবানগোলা থানার জালিবাগিচা ফুলতলার দোতলার ঝকঝকে অর্থলগ্নি সংস্থার ওই কার্যালয় তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। কওসর আলির অভিযোগ, “থানায় যাওয়ার পরে আবু সায়েমের লোকজন ফোনে জাল টাকা বা হেরোইনের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল খাটানোর হুমকি দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমে মুখ না খোলার জন্য মঙ্গলবার রাতে প্রায় ৫০ জনের একটি দল মোটরবাইকে করে এসে আমাকে ও ডালিম শেখকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে শাসায়।”
আবু সায়েম অবশ্য মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে আমি কিছু বলব না।” বিধানসভার পরিষদীয় সচিব তথা মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূলের সভাপতি চাঁদ মহম্মদ বলেন, “আমি ওই ব্যাপারে কিছুই জানি না। অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি প্রায় দেড়-দু’ বছর আগেকার ঘটনা। যাঁরা এজেন্ট ছিলেন, তাঁরা এত দিন কী করছিলেন? আমার মনে হয়, গোটা বিষয়টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের চক্রান্ত। আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ওই পরিকল্পনা করা হয়েছে।” যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁকে ওই আপ্ত-সহায়ক পদ থেকে কী সরানো হবে? চাঁদ মহম্মদ বলেন, “বিষয়টি দলের মধ্যে আলোচনা করে দেখব।”