চওড়া পিচের রাস্তাতেও লছিমনই ভরসা, বাস-ট্রেকার যায় অন্য পথে

রাস্তা তৈরি হয়েছে প্রায় ১৮ বছর আগে। কিন্তু সে রাস্তা দিয়ে না চলে ট্রেকার, না বাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভরসা বলতে লছিমন কিংবা ছোট গাড়ি। মুর্শিদাবাদের ডোমকল প্রশাসনিক ভবন থেকে গোধনপাড়া পর্যন্ত চওড়া পিচের রাস্তা তৈরি হলেও আজ পর্যন্ত তার সুফল পেলেন না এলাকার মানুষ। বছর পনেরো আগে ডোমকল পৃথক মহকুমা হওয়ার সময় রানিনগর ১ ও ২ ব্লক (আগে লালবাগ মহকুমায় ছিল) ডোমকলের মধ্যে পড়ে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০১৪ ০০:০২
Share:

রাস্তা তৈরি হয়েছে প্রায় ১৮ বছর আগে। কিন্তু সে রাস্তা দিয়ে না চলে ট্রেকার, না বাস। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভরসা বলতে লছিমন কিংবা ছোট গাড়ি। মুর্শিদাবাদের ডোমকল প্রশাসনিক ভবন থেকে গোধনপাড়া পর্যন্ত চওড়া পিচের রাস্তা তৈরি হলেও আজ পর্যন্ত তার সুফল পেলেন না এলাকার মানুষ।

Advertisement

বছর পনেরো আগে ডোমকল পৃথক মহকুমা হওয়ার সময় রানিনগর ১ ও ২ ব্লক (আগে লালবাগ মহকুমায় ছিল) ডোমকলের মধ্যে পড়ে যায়। মহকুমা সদরের সঙ্গে রানিনগর ১ ও ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার সংযোগ রক্ষার জন্য দশ কিলোমিটার দীঘর্র্ এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল তার কিছুটা আগেই। কিন্তু যাত্রীবাহী বাস বা ট্রেকারের রুট গড়ে ওঠেনি এতদিনেও। রানিনগরের বাসিন্দা সফিকুল ইসলামের কথায়, “এখনও আমাদের সেই ইসলামপুর ঘুরেই ২২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে মহকুমা সদর ডোমকলে যেতে হয়।”

এ দিকে, ডোমকল মহকুমা হওয়ার পর থেকে তার পরিসর বেড়েছে। মহকুমা হাসপাতাল, মহকুমা আদালত সবই রয়েছে সদর ডোমকলে। এখন বড় বাজারও হয়েছে ডোমকলে। ফলে প্রশাসনিক কাজ ছাড়াও নানা কাজে রানিনগরের বাসিন্দাদের যেতে হয় ডোমকলে। গোধনপাড়া এলাকার বাসিন্দা বাবলু ইসলাম বলেন, “গাড়িঘোড়া না থাকার ফলে বিপাকে পড়তে হয় আমাদের। সন্ধ্যার পর লছিমনও পাওয়া যায় না। একেবারে বোঝাই না হওয়া পর্যন্ত ম্যাজিক গাড়িগুলো ছাড়ে না।” সুন্দর রাস্তা থাকা সত্ত্বেও গাড়ির অভাবে ইসলামপুর হয়ে ঘুরে যেতে হয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন রামনগর হাইমাদ্রাসার শিক্ষক গোলাম মোস্তাফা বিশ্বাস। তিনি জানান, ডোমকল এলাকার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ রয়েছে। বাস, ট্রেকার চললে সবচেয়ে বেশি উপকার হত ছাত্র-ছাত্রীদের।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ওই রুটে বাস ও ট্রেকার নিয়মিত চালানোর জন্য উদ্যোগী হোক প্রশাসন। বাসের ক্ষেত্রে বহরমপুর থেকে যেগুলি সাগরপাড়া, ধরামপুর, শেখপাড়া ও রানিনগর যায় সেগুলিকে ইসলামপুর থেকে ভায়া ডোমকল ঘুরে যাওয়ার দাবি জানাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় এক ফল ব্যবসায়ী বলেন, “১০ কিলোমিটারের জন্য আমরা আলাদা বাস চালু করতে বলছি না। কিন্তু দিনে গোটা কয়েক বাসও যদি ডোমকল ঘুরে যায়, আমাদের খুব সুবিধা হয়। অন্ততপক্ষে ট্রেকার রুট চালুর জন্য তো উৎসাহ দিতে পারে প্রশাসন।”

রানিনগর ২-এর বিডিও সুব্রত মজুমদার বলেন, “এই রুটে গাড়ি চললে সবচেয়ে বেশি খুশি হব আমি। কিন্তু গাড়ি মালিকেরা কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না। সকলেই রানিনগর থেকে সরাসরি বহরমপুর রুট নিতে চান।”

বাস বা ট্রেকার মালিকদের অসুবিধা কোথায়?

উভয়পক্ষই একযোগে অবৈধ ছোট গাড়িকে দায়ী করছে। ডোমকল ট্রেকার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আবদুল মতিন বিশ্বাস বলেন, “ছোট ছোট রুটে মূল সমস্যাটা ম্যাজিক গাড়ি আর মোটর চালিত ভ্যানদের নিয়ে। প্রশাসনিক অনুমতি ছাড়াই এরা যাত্রী তুলছে। কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয় না। মাঝখান থেকে আমরা ট্রেকার চালিয়ে লোক পাব না। লোকসান হবে।” আর মুর্শিদাবাদ জেলার বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক তপন অধিকারী জানান, জেলায় এখন যে পকেট রুটগুলোতে বাস চলছে, সেগুলোই বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। নতুন করে রুট তৈরি তো পরের কথা। তিনি বলেন, “অবৈধ ছোট গাড়ির দাপটে বেজায় ক্ষতি হচ্ছে আমাদের। এগুলো বন্ধ করার জন্য পুলিশ-প্রশাসন কারও কোনও মাথাব্যাথা নেই। যা অবস্থা তাতে কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো ছোট রুটগুলো উঠিয়ে দিতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন