লালবাগের সভায় মমতার অভিযোগ নস্যাৎ অধীরের

দিন পনেরার মাথায় কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের জবাব দিলেন কেন্দ্রের রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর। ২০ মার্চ লালবাগের আস্তাবল ময়দানে দলীয় কর্মিসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদে মীরজাফরদের বাস।’’ শুক্রবার ওই একই ময়দানে দাঁড়িয়ে অধীরবাবু মুখ্যমন্ত্রীর ওই কটাক্ষের পাল্টা জাবাব দিয়ে বলেন, “মীরজাফরের দেশ বলে জেলার মানুষকে আপনি অপমান করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লালবাগ শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৪ ০০:৩৭
Share:

কর্মিসভায় অধীর চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।

দিন পনেরার মাথায় কর্মিসভায় মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের জবাব দিলেন কেন্দ্রের রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর।

Advertisement

২০ মার্চ লালবাগের আস্তাবল ময়দানে দলীয় কর্মিসভায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুর্শিদাবাদে মীরজাফরদের বাস।’’ শুক্রবার ওই একই ময়দানে দাঁড়িয়ে অধীরবাবু মুখ্যমন্ত্রীর ওই কটাক্ষের পাল্টা জাবাব দিয়ে বলেন, “মীরজাফরের দেশ বলে জেলার মানুষকে আপনি অপমান করেছেন। এই জেলা নবাব সিরাজউদ্দৌলা, মীরমদন, মোহনলালদেরও জেলা। মুর্শিদাবাদের মানুষকে অপমান করায় আপনি একটি ভোটও পাবেন না।” তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, “মুর্শিদাবাদ জেলায় আপনি যাদেরকে দাঁড় করিয়েছেন, তাহলে তাঁরা কোন সিরাজউদ্দৌলা!”

অধীরবাবুর আরও বক্রোক্তি, “এই জেলায় ঘষেটি বেগমও ছিলেন। এই জেলার বীরত্বের গৌরবের ইতিহাস রয়েছে। ওই গৌরবগাথা প্রশংসিত। মুখ্যমন্ত্রী সেই ইতিহাস জানেন না।”

Advertisement

ওই দিনের সভায় তৃণমূলনেত্রী বলেছিলেন, “এই জেলায় তৃণমূল হামাগুড়ি দিচ্ছে। তৃণমূলের হাতেখড়ি হয়েছে।” এ দিন অধীরবাবু মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যকে কটাক্ষ করে বলেন, “দিদি বাংলার সংস্কৃতি বোঝেন না। হামাগুড়ি দেওয়ার সময় কারও হাতেখড়ি হয় না। যতই তিনি হামাগুড়ি-হাতেখড়ির কথা বলুন না কেন। এই জেলায় তৃণমূলের কিছুই জুটবে না।”

এ দিনের সভায় অধীরবাবু বক্তব্য রাখার সময়ে কর্মীরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। হাততালিতে সভা মুখরিত করেন সভায় হাজির কয়েক হাজার কর্মী। তাঁদের সামনে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, “মুর্শিদাবাদ কংগ্রেস নিজের ‘স্টাইলে’ চলে তিনটে লোকসভা আসনেই জয়ী হয়েছে।”

লালবাগের সভাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদিকে ‘দাঙ্গার মুখ’ বলে অভিহিত করেন। বলেছিলেন, বিজেপিকে একটা ভোটও নয়। এ দিন অধীরবাবু তারও জবাব দিলেন। তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদি কলকাতায় এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বোন সম্বোধন করে বাংলার লাড্ডু খাওয়ার কথা বলেছিলেন। তখন তিনি কিছু বলেননি। এনডিএ আমলে আপনি মন্ত্রী ছিলেন। আপনার সঙ্গে সম্পর্ক বহুদিনের। আপনি সেই সম্পর্ক ছেদ করতে চান না।”

সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে অধীরবাবু বলেন, “সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের কথা এখন আপনার মুখে শোনা যায় না। সিঙ্গুরে সভা করলেন। সেখানে তাপসী মালিকের পরিবারকে ডাকলেন না। নন্দীগ্রামের কথা বলছেন না। নির্বাচনের বাজারে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামকে পণ্য হিসেবে বেচেছিলেন। যারা সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম ভুলে যায়। তাদের কাছে বাংলার মানুষ কি চাইবে?”

কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তৃণমূল নেত্রীর আকছার তোলা বঞ্চনার অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে এ দিন অধীরবাবু কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা বলেন। পাশাপাশি চিটফান্ড নিয়ে সিবিআই তদন্তের প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারের সমালোচনাও করেন রেল প্রতিমন্ত্রী।

দলবদল। লোকসভা ভোটের মুখে ফের ধাক্কা। বৃহস্পতিবার রাতে জেলা পান্থপাড়া মোড়ে তৃণমূলের দলীয় সভায় নদিয়ার রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের শ্যামনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের রুমকি হাওলাদার ১০ জন সদস্যকে নিয়ে শাসকদলে যোগ দিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন