রাজ্য জুড়ে সংশোধনাগারের ভিতরে বেআইনি ভাবে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা, অবৈধ পথে পাচার হওয়া নেশাদ্রব্য সুলভে পাওয়া এখন প্রায় নিয়মে পরিণত হয়েছে। ‘দর্শনী’ ছাড়া বাড়ির লোকজন আবাসিকদের সঙ্গে জেলের ভিতরে ও আদালতের লক আপে দেখা করতে পারেন না। এমনই বহু অভিযোগ কেবল অকপটে মেনেই নিলেন না, বিধানসভার স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান (স্বরাষ্ট্র) তথা তৃণমূলের পুরুলিয়ার বিধায়ক কেপি সিংহদেও বললেন, “এ সব এখন রাজ্যের সব জেলে নিয়মের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। এ সবের শুরু অবশ্য অনেক আগে।” সিপিএমের বিধায়ক আনিসুর রহমান, কংগ্রেসের মনোজ চক্রবর্তী, তৃণমূলের নুরে আলম চৌধুরী-সহ আট বিধায়ককে নিয়ে মঙ্গলবার সকালে বহরমপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার ও আদালত পরিদর্শন করেন কেপি সিংহদেও। জেলখানার ভিতরে বিড়ি-সহ নেশার দ্রব্য ও মোবাইল ফোন ঢোকে কী ভাবে তা জানতে চাওয়া হলে সংশোধনাগারের প্রধান ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, “এ সব ত্রুটি বিচ্যুতি দূর করার জন্যই আমাদের পরিদর্শন।” বহরমপুর সংশোধনাগারের আবাসিকদের আর্সেনিকে দূষিত জল খেতে হয়, শৌচাগার ও থাকার ওয়ার্ডের অনেকগুলি ব্যবহারের অনুপযুক্ত বলে অভিযোগ। খাবারও খুব নিম্নমানের বলে কমিটির সদস্যদের সামনে জানান আবাসিকেরা। এ সবের প্রতিকারের জন্যও তাঁদের কমিটি সুপারিশ করবে বলে তিনি জানান।
সম্প্রতি বহরমপুর জেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এক আবাসিককে খুন করেছে আর এক আবাসিক। অন্য এক কয়েদি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় বিনা চিকিত্সায় পড়ে থেকে মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ। কয়েক দিন আগে নিজেদের মারামারিতে এক আবাসিক গুরুতর জখম হন। অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ খবর পর্যন্ত দেননি। কেপি সিংহদেও-র আশ্বাস, “এ সব যাতে না ঘটে, সেই ব্যাপারে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবাসিকদের সঙ্গে বাড়ির লোকের যোগাযোগের জন্য সংশোধনাগারের ভিতরে টেলিফোন বুথ করার ভাবনা চিন্তা চলছে। পানীয় জল দূষণমুক্ত করার জন্যও প্রকল্প নেওয়া হবে।”