প্রকল্প: রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড চত্বরে। নিজস্ব চিত্র
রামপুরহাটে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থার বাসের ডিপোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা পরিদর্শন করলেন ওই সংস্থার আধিকারিকেরা। বুধবার সকালে রানিগঞ্জ–মোরগ্রাম ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড চত্বরে। ছিলেন দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর কিরণকুমার গোদালা, স্থানীয় বিধায়ক তথা কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, রামপুরহাট মহকুমাশাসক শ্রুতিরঞ্জন মহান্তি, অতিরিক্ত জেলাশাসক রঞ্জনকুমার ঝা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রামপুরহাটে রানিগঞ্জ-মোরগ্রাম জাতীয় সড়ক দিয়ে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাস মালদহ, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ি, ফরাক্কা, উমরপুর, পুরুলিয়া, দুর্গাপুর, আসানসোল, বাঁকুড়া, খড়গপুর, সিউড়ি রুটে যাতায়াত করে। জাতীয় সড়কের পাশে বাসস্ট্যান্ড থাকলেও সরকারি বাসের কোনও স্টপেজ সেখানে নেই। বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া লোটাস প্রেস মোড় ও বগটুই মোড়ে স্টপেজে যাত্রীরা ওঠানামা করেন।
অনেক দিন ধরেই এলাকার বাসিন্দারা জাতীয় সড়কের পাশে সরকারি বাসের ডিপো তৈরির দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, আশিসবাবু পরিবহণ দফতরে এলাকাবাসীর লিখিত আর্জি জমা দিয়েছিলেন। বছর দেড়েক আগে পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ থেকে সড়কপথে কলকাতা ফেরার পথে রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ড পরিদর্শন করেন। বছর দেড়েক পরে ফের একই জায়গা পরিদর্শন করলেন কিরণকুমার গোদালা। তার আগে মহকুমা প্রশাসনিক কার্যালয়ে আশিসবাবু ও জেলা প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
রামপুরহাট বাসস্ট্যান্ডে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের জায়গা পরিদর্শনের সময় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন বীরভূম জেলা বাস মালিক সমিতির রামপুরহাট শাখার সদস্য সহ বাস কর্মচারী ইউনিয়নের সদস্যরা। জায়গা পরিদর্শনের পরে বাস মালিক সমিতির অফিসে আলোচনায় বসেন পরিবহণ সচিব, কৃষিমন্ত্রী এবং অন্য আধিকারিকেরা।
কিরণবাবু জানান, রামপুরহাটে দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ নিগমের বাস ডিপো করার আবেদন জানানো হয়েছিল। রামপুরহাটে জাতীয় সড়কের পাশে বেসরকারি বাসস্ট্যান্ড চত্বরে ডিপো গড়ে তোলা হবে। সেখান থেকে ২২টি রুটে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাসস্ট্যান্ড গড়ে তুলতে রামপুরহাট পুরসভার কাছে জায়গা দেওয়ার আবেদন করা হবে। পুরসভার ছাড়পত্র পেলে এ সংক্রান্ত ‘ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্ট’ তৈরি করা হবে। উন্নত মানের ওই বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হলে যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্যের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ আরও বাড়বে বলে আশাপ্রকাশ করেন গোদালা।
আশিসবাবু বলেন, ‘‘জায়গার জন্য পুরসভা থেকে ছাড়পত্র পেতে অসুবিধা হবে না বলে আশা করি।’’ বাস মালিক সমিতি, বাস কর্মচারীদের সহযোগিতা নিয়ে ডিপো নির্মাণ করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বীরভূম জেলা বাসমালিক সমিতির সদস্যরা জানান, এখন ৪.৮৫ একর জায়গা নিয়ে রয়েছে বাসস্ট্যান্ড। তার মধ্যে এক দিকে ২৫ শতাংশ জায়গা দক্ষিণবঙ্গ পরিবহণ সংস্থাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রাথমিক ভাবে নেওয়া হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডে পানীয় জল, শৌচাগার, আলোর ব্যবস্থা, জঞ্জাল সাফাইয়ের ক্ষেত্রে পুর-পরিষেবা আরও বেশি হওয়া প্রয়োজন বলেও সমিতির সদস্যরা জানিয়েছেন।
বুধবার দেখা যায়, দিনদুপুরে বাসস্ট্যান্ডের দু’প্রান্তের দু’টি হাইমাস্ট আলো জ্বলছে। এলাকার বাসিন্দারা জানান, দিনে জ্বললেও রাতে অনেক দিনই অন্ধকার থাকে গোটা এলাকা। বাসস্ট্যান্ডে রাতের দিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার দিকে আরও বেশি নজর রাখা প্রয়োজন বলেও তাঁরা জানান।