Dead body recovered

লটারি টিকিট বিক্রিতে চাপ, ক্লাসে অপমান! দার্জিলিঙে পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার, ধৃত প্রধান শিক্ষক

দার্জিলিংয়ে নাবালকের দেহ উদ্ধার হওয়ার পরেই মানসিক চাপ দেওয়ার অভিযোগ তুলে স্কুলে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকেরা। বিক্ষোভ দেখানো হয় দার্জিলিং সদর থানার সামনেও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৯:১২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

লটারির টিকিট বিক্রি করতে না পারায় প্রতি দিনই গোটা ক্লাসের সামনে কটূক্তি সহ্য করতে হত স্কুল পড়ুয়াকে। গত শুক্রবারও বছর ষোলোর ছাত্রকে স্কুল থেকে অপমান করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার পর রাতেই স্কুলের পোশাকে ওই পড়ুয়ার দেহ উদ্ধার হল বন্ধ ঘর থেকে। দার্জিলিংয়ে নাবালকের দেহ উদ্ধার হওয়ার পরেই মানসিক চাপ দেওয়ার অভিযোগ তুলে স্কুলে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকেরা। বিক্ষোভ দেখানো হয় দার্জিলিং সদর থানার সামনেও। মৃতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গগেন্দ্র গুরুংকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার প্রবীণ প্রকাশ বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। সব খতিয়ে দেখা হবে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত পড়ুয়া দার্জিলিঙের রাজবাড়ির এলাকার একটি সরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। দার্জিলিঙের প্রগতি গ্রামের পিবি গুরুং রোডে তার বাড়ি। শ্রমিক পরিবারের সন্তান সে। অগস্ট মাসের মাঝামাঝি স্কুল থেকে পড়ুয়াদের চার পাতা করে র‍্যাফেল (লটারি) টিকিট বিক্রি করতে দেওয়া হয়েছিল। ওই পড়ুয়া চার পাতার মধ্যে দু’পাতাই বিক্রি করতে পেরেছিল। টিকিট বিক্রির ৮০০ টাকা আর অবিক্রিত দু’পাতা টিকিট সে স্কুলে ফেরত দিতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি। পরিবারের অভিযোগ, বাকি টিকিটও তাকে বিক্রি করার জন্য ক্রমাগত চাপ দেওয়া হচ্ছিল। টিকিট বিক্রি করতে না পারায় ভরা ক্লাসে অপমান করা হত তাকে। শুধু তা-ই নয়, ওই পড়ুয়াকে প্রায় প্রতিদিনই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হত। শুক্রবারও একই ভাবে নাবালককে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। অপমান সহ্য করতে না পেরেই পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছে পরিবার।

বাড়ির লোকেদের দাবি, শুক্রবার স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে নিজেকে ঘরবন্দি করে ফেলেছিল ওই পড়ুয়া। এর পর রাতে শোওয়ার ঘরে স্কুলের পোশাকে তার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান বাবা, মা। এই ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন মৃতের পরিজন এবং পড়শিরা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। মৃতের দাদা বলেন, ‘‘র‌্যাফেল টিকিট বিক্রি করতে না পারায় ভাইকে প্রতিনিয়ত চাপ দেওয়া হচ্ছিল। অপমান করা হচ্ছিল। ও পারছিল না দেখে আমিও ওকে টিকিট বিক্রি করতে সাহায্য করেছিলাম। কিন্তু আমরা গরিব মানুষ। তেমন চেনা-পরিচিতি নেই। বার বার অপমান সহ্য করতে না পেরে মানসিক অবসাদে আত্মহত্যা করেছে আমার ভাই। এর জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ দায়ী।’’

Advertisement

যাদবপুরকাণ্ড নিয়ে র‌্যাগিং নিয়ে বিতর্কের মধ্যে এই ঘটনায় প্রশ্নের মুখে স্কুল কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন। স্কুলের অন্য এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, ‘‘কেন বাচ্চাদের টিকিট বিক্রি করতে দেওয়া হবে? জোর করে টিকিট বিক্রি করানো হচ্ছে। এ সব কোনও ভাবেই মানা যায় না।’’ এই ঘটনার প্রেক্ষিতে দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘ঘটনাটি শুনেছি। প্রশাসন যা পদক্ষেপ করার, করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement