Crime against Woman

নাবালিকা ধর্ষণে নেতার কারাদণ্ড

পরে ওই নাবালিকাকে কলকাতায় কয়েক দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ইতিমধ্যে সে বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ওই ছাত্রীর মা পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

Advertisement

গৌর আচার্য 

হেমতাবাদ শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৩ ০৭:২৫
Share:

সোহরাবকে পুলিশ লকআপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

১৪ বছরের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে, আটকে রেখে ধর্ষণের দায়ে তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা নির্দেশ দিল আদালত। বুধবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ফাস্ট ট্র্যাক প্রথম কোর্টের বিচারক বসন্ত শর্মা ওই নির্দেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত সোহরাব আলি হেমতাবাদ পঞ্চায়েতের রণহট্টা সংসদের তৃণমূল সদস্য। পাশাপাশি, হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূলেরও সদস্য। সোহরাব হেমতাবাদের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মণের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত। এ বিষয়ে জানতে চেয়ে সত্যজিৎ বর্মণকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি, মেসেজের জবাবও দেননি। হেমতাবাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি শেখরচন্দ্র রায় বলেন, “সোহরাব দলের সক্রিয় নেতা ছিল। তাই তার সঙ্গে দলের নেতা, বিধায়কদের ভাল সম্পর্ক থাকাটাই স্বাভাবিক। অতীতে ব্যক্তিগত জীবনে কোথায়, কী করেছে তার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক থাকতে পারে না। তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, তা দলে আলোচনা করে ঠিক হবে।”

Advertisement

হেমতাবাদের বিডিও লক্ষ্মীকান্ত রায়ের দাবি, কোনও পঞ্চায়েত সদস্য আদালতে দোষী প্রমাণিত হয়ে কারাবাসে গেলে, সরকারি নিয়মে তাঁর পঞ্চায়েতের সদস্য পদ খারিজ হওয়ার কথা। বিডিও বলেন, “প্রশাসনের তরফে ঘটনার খোঁজ নিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

গত প্রায় সাড়ে আঠারো বছর ধরে আদালতে ওই মামলা চলছিল। ফাস্ট ট্র্যাক ফাস্ট কোর্টের সরকারি আইনজীবী অমিত দে সরকার জানিয়েছেন, ২০০৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রণহট্টার বাসিন্দা সোহরাব এক নবম শ্রেণির ছাত্রীকে অপহরণ করে, গাড়িতে তুলে প্রথমে কালিয়াগঞ্জ ও পরে কলকাতায় নিয়ে যায়। পরে ওই নাবালিকাকে কলকাতায় কয়েক দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে। ইতিমধ্যে সে বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ওই ছাত্রীর মা পুলিশের কাছে নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

Advertisement

অমিত বলেন, “পুলিশ তদন্তে নেমে সোহরাবের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করে। সোহরাবকে গ্রেফতারও করা হয়। বেশ কিছু দিন জেল হেফাজতে থাকার পরে সে জামিনে ছাড়া পায়। বাদী ও বিবাদী পক্ষের ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার আদালত সোহরাবকে দোষী সাব্যস্ত করে জেল হেফাজতে পাঠায়।” অমিত জানিয়েছেন, অপহরণ ও নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণের দু’টি পৃথক ধারায় বিচারক সোহরাবকে আলাদা করে তিন ও পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও দু’হাজার এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। সব ক্ষেত্রে জরিমানা অনাদায়ে, ছ’মাস করে সাজার মেয়াদ বাড়বে। সব সাজা একই সঙ্গে চলবে।

নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যেরা এ দিন সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে চাননি। সোহরাব আদালতে দাবি করেছে, “আমি নির্দোষ। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আইনের পথে লড়ব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন