Coronavirus

বরাত জোরে বাঁচলেও ৫৬ জন পথেই

শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ রাজগড়ে ওই দুর্ঘটনার জেরে অল্পবিস্তর আহত হলেও বেঁচে গিয়েছেন ট্রাকের যাত্রী ৫৬ জন শ্রমিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ০৭:২২
Share:

চিন্তা: পথে মধ্যপ্রদেশে দুর্ঘটনায় আটকে পড়া শ্রমিকরা। নিজস্ব চিত্র

লকডাউন শুরু হতেই কাজ বন্ধ। নিজেদের কাছে কানাকড়িও ছিল না। জুটছিল না খাবারও। তাই মুম্বই থেকে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বাড়িতে ফিরছিলেন দু’শোরও বেশি শ্রমিক। দু’দিনে সাতশো কিলোমিটার পথ পার হওয়ার পরে মধ্যপ্রেদেশে দুর্ঘটনার মুখে পড়ল একটি ট্রাক।

Advertisement

শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ রাজগড়ে ওই দুর্ঘটনার জেরে অল্পবিস্তর আহত হলেও বেঁচে গিয়েছেন ট্রাকের যাত্রী ৫৬ জন শ্রমিক। কিন্তু ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ায় গুরুতর আহত হয়েছেন চালক ও খালাসি। ফলে ফেরার পথ বন্ধ। পুলিশ আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে একটি বন্ধ ধাবায় রেখেছে। কিন্তু মাঝপথে আটকে এ বার কী ভাবে বাড়ি ফিরবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ওই শ্রমিকরা। তাঁরা জানিয়েছে্ন, কারও কাছে কানাকড়িও নেই।

ভিন্‌ রাজ্যে দুর্ঘটনায় পড়া ওই শ্রমিকদের কথা জেনে অবশ্য সেখানকার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন এ রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।

Advertisement

জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুরও বলেন, ‘‘আমি মালদহ ও রাজগড় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওঁরা যাতে সুষ্ঠু ভাবে ফিরতে পারেন সেই চেষ্টা করছি।’’ একই কথা বলেছেন জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক মোস্তাক আলমও। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এর মধ্যে রাজগড় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের ফেরানোর ব্যবস্থা করার আবেদন জানিয়েছেন।

মুম্বইয়ের মরল্যান্ড রোড এলাকায় থাকতেন হরিশ্চন্দ্রপুরের বিভিন্ন এলাকার ওই শ্রমিকরা। সেখানে কেউ রাস্তা সংস্কার কেউ বা নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করেন। ফোনে তাঁরা জানিয়েছেন, লকডাউনের পরে স্থানীয় প্রশাসন বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ত্রাণ দিয়ে কোনও রকমে দিন কাটছিল। কিন্তু তা-ও তা নিয়মিত জুটছিল না বলে অভিযোগ। শ্রমিকদের ফেরানোর ট্রেন চালু হলেও, কবে তাতে জায়গা পাবেন তা নিয়েও কোনও নিশ্চয়তা ছিল না। এর পরেই তাঁরা ট্রাকে ফেরার সিন্ধান্ত নেন। মুম্বইয়ে এক ট্রাক মালিককে আগাম টাকা দেওয়ার পরে রওনা হয় ট্রাকটি।

কয়েক জন শ্রমিক জানান, প্রতি জন পাঁচ হাজার টাকা করে ভাড়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা চারটি ট্রাকে হরিশ্চন্দ্রপুরে রওনা দেন। এ দিন রাজগড়ে জাতীয় সড়কে স্থানীয় পুরসভার গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে একটি ট্রাকের। তাতে গাদাগাদি করে কোনও রকমে বসেছিলেন ৫৬ জন যাত্রী।

হরিশ্চন্দ্রপুরের সিরিশবোনার শ্রমিক ফাইজুদ্দিন আহমেদ এ দিন ফোনে বলেন, ‘‘ওখানে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে। তাই ফেরার সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু এ বার কী করব জানি না।’’

আর এক শ্রমিক জাহাঙ্গির আলম বলেন, ‘‘আমাদের কাছে একটা টাকাও নেই। রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে অনেকেই খাবার দিচ্ছিলেন। তা খেয়েই ফিরছিলাম। এ বার বাড়ি কী ভাবে ফিরব কে জানে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement