জন্মদিনে থানার আইসি-র মুখে কেক অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার

এক হাতে ফুলের তোড়া, আর এক হাতে উপহারের প্যাকেট। থানায় আইসি-র চেম্বারে ঢুকলেন একাধিক মামলায় অভিযুক্ত এক তৃণমূল নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিনহাটা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৫
Share:

ফেসবুকের এই ছবি ঘিরেই বেধেছে বিতর্ক।

এক হাতে ফুলের তোড়া, আর এক হাতে উপহারের প্যাকেট। থানায় আইসি-র চেম্বারে ঢুকলেন একাধিক মামলায় অভিযুক্ত এক তৃণমূল নেতা। তার পর দু’জনে হাসি হাসি মুখে শুভেচ্ছা ও উপহার বিনিময় করলেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এমনই ঘটনা ঘটল দিনহাটা থানায়।

Advertisement

এ দিন দিনহাটা থানার আইসি সঞ্জয় দত্তের জন্মদিন ছিল। জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলেন তৃণমূলের দিনহাটা ১ ব্লকের সভাপতি নুর আলম হোসেন। তিনি কোচবিহার জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্বেও রয়েছেন। দু’জনেই ফেসবুকে তাঁদের নিজস্ব পাতায় ওই ছবি পোস্ট করেন। তা নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। একপক্ষ দাবি করেন, দিনহাটায় পুলিশের নিরপেক্ষতা যে নেই, তা এই ছবি থেকেই পরিষ্কার। আর একপক্ষের অবশ্য দাবি, জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানো একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। সেখানে কেউ কাউকে শুভেচ্ছা জানাতেই পারেন।

নুর আলম হোসেন বলেন, “আমি একটি প্রয়োজনে থানায় যাই। সেখানে গিয়ে আইসি-র জন্মদিনের কথা জানতে পেরে তাঁকে শুভেচ্ছা জানাই। এর মধ্যে আর কিছুই নেই।” আইসি সঞ্জয়বাবুর বক্তব্য, “সহকর্মীরা জন্মদিনের ছোট্ট একটি অনুষ্ঠান করেন। নুর আলম হোসেন কোনও কারণে থানায় এসে তা জানতে পেরে সেই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।” সঞ্জয়বাবুর কথায়, পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে এখানে প্রশ্ন ওঠা ঠিক নয়।

Advertisement

দিনহাটার বিধায়ক তথা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “এটা যে কারও ব্যক্তিগত রুচির ব্যাপার। তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।” সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া ব্লক সভাপতির পাশে দাঁড়িয়েই জানিয়ে দেন, কারও জন্মদিন পালন অপরাধ নয়। তাতে মানুষের মধ্যে একটা সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের বার্তা দেয়। যুব তৃণমূলের দিনহাটা ১ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক অর্জুন চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, “দিনহাটা পুলিশ ও নুর আলমের হোসেনের সঙ্গে যে যোগসাজশ রয়েছে, তা আবার প্রমাণিত হল।’’

গত পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে মূল ও যুব তৃণমূলের দ্বন্দ্বে একাধিকবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দিনহাটা। দুই পক্ষের সংঘর্ষে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের রয়েছে ভুরিভুরি। এমন অবস্থায় ওই এলাকার আইনশৃঙ্খলা শক্ত হাতে ধরার নির্দেশ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, তৃণমূলের ওই সভাপতির বিরুদ্ধে যুব নেতা-কর্মীদের মারধর, বাড়ি ও গাড়ি ভাঙচুর সহ একাধিক মামলা রয়েছে। যদিও নুর আলম হোসেন জানান, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা করা হয়। সব মামলাতেই তিনি জামিন নিয়েছেন বলেও জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন