মাস ঘুরতে না ঘুরতেই ফের অতিরিক্ত টোল ট্যাক্স আদায়ের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামল বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনগুলি। রবিবার সকাল থেকে মালদহের দু’টি রুটে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বেসরকারি বাস ধর্মঘটের ডাক দেন সংগঠনের নেতৃত্বরা। একই সঙ্গে, আজ সোমবার মালদহের দু’টি টোল প্লাজায় অবরোধেরও হুঁশিয়ারিও দিয়েছে পরিবহণ মালিক সংগঠন ও জেলা ব্যবসায়ী সমিতি।
মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘গত মাসে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল টোল ট্যাক্স কম নেওয়া হবে। কিন্তু জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সে সব কোনও ব্যবস্থাই না নেওয়ায় আমাদের বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামতে হয়েছে। আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’
এ দিকে, আচমকা বেসরকারি বাস ধর্মঘটের জেরে চরম নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। গাড়ির অপেক্ষায় ইংরেজবাজারের রথবাড়ি, সুকান্ত মোড়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাঁদের। ছোট গাড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনও রকমে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় তাঁদের। ফলে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে যাত্রী মহলেও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘প্রশাসনের উচিত সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা।’’
মাস খানেক আগে গাজলে ও বৈষ্ণবনগরের ১৮ মাইলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে টোল ট্যাক্স আদায় শুরু হয়। বাস ও মিনিবাস যাতায়াতের ক্ষেত্রে টোল ট্যাক্স নেওয়া হচ্ছে ৪৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে বাস ও মিনিবাস মালিকেরা দাবি করেন যাতায়াতের ক্ষেত্রে ২১০ টাকা নেওয়া হোক। এই নিয়ে গত অক্টোবর মাসে টানা আট দিন লাগাতার মালদহ-রায়গঞ্জ, বালুরঘাট এবং ফরাক্কা রুটে বেসরকারি পরিবহণ চলাচল বন্ধ থাকে। মালদহের পাশাপাশি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের পরিবহণ মালিক সংগঠন ও ব্যবসায়ী সমিতি আন্দোলনে সামিল হয়েছিল।
আন্দোলনের ফলে ওজনের ভিত্তিতে টোল আদায় করা শুরু করেছিল কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি খুচরো নিয়ে সমস্যা থাকায় টোল আদায় বন্ধ ছিল। শুক্রবার থেকে ফের তা শুরু হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি মতো টোল না নেওয়ার অভিযোগ তুলে ফের আন্দোলন শুরু হয়েছে জেলায়। বাস মালিকদের দাবি, একে নোটের আকালে দিনে ৫০০ টাকা রোজগার করাই দায় হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় ৪৫০ টাকা করে টোল আদায় করা হলে বেসরকারি পরিবহণ বলে আর কিছু থাকবে না। প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে আমাদের আন্দোলন চলবেই।
মালদহের অতিরিক্ত জেলা শাসক দেবতোষ মণ্ডল বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, জেলার বণিক মহল ও একাধিক পরিবহণের মালিক সংগঠনের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানো হবে।’’