ছেলেধরা সন্দেহে এক বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীকে মারধরের সময় তাকে উদ্ধার করায় পুলিশ ক্যাম্পে বিক্ষোভ দেখাল উত্তেজিত জনতা। ক্যাম্পে হামলা চালানোরও অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে।
বুধবার রাতে চোপড়া থানার কাঁচাকালি এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে ওই যুবককে মারধর শুরু করে জনতা। পুলিশ তাকে উদ্ধার করলে ওই যুবককে তাদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে বিক্ষোভ দেখায় তারা। পুলিশ জানিয়েছে, একদল যুবক পুলিশ ক্যাম্প লক্ষ করে ঢিল মারতে থাকে। ঢিলে ক্যাম্পের ভেন্টিলেটার, কাঠের জানালার একাংশ ভেঙে যায়। পুলিশ কর্মীরাও ঢিলের ঘায়ে জখম হন। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ ও শূন্যে এক রাউন্ড রবার গুলি ছুড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়।
ইসলামপুরের এসডিপিও বৈভব তিওয়ারি জানান, ওই এক বাংলাদেশিকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পরই এলাকার লোকজন জড়ো হন। তাঁরা ওই ব্যক্তিকে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। পুলিশ কর্মীরা বাধা দেওয়ায় ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। মৃদু লাঠিচার্জ এবং একটি গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তিনজনকে ধরা হয়েছে। এসডিপিও বলেন, ‘‘ওই বাংলাদেশি যুবক কোথা থেকে কেন এসেছিল তা দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এলাকায় ছেলে ধরা বার হয়েছে বলে কয়েকদিন ধরে গুজব ছড়ায়। রাতে চোপড়ার কাঁচাকালি এলাকাতে মহম্মদ হৃদয় হুসেন নামে বাংলাদেশি যুবককে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। হৃদয়ের বাড়ি বাংলাদেশের পঞ্চাগর জেলার মাজিপুরে। বাসিন্দাদের একাংশ তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বেআইনি অনুপ্রবেশকারী হিসাবে তাকে পুলিশ ক্যাম্পেই রাখা হয়। চোপড়া থানার গাড়ি এসে ধৃতকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। সেই সময় বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কয়েকজন মদ্যপ অবস্থায় ছিল বলে অভিযোগ।
চোপড়ার কাঁচাকালির ওই পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্ব রয়েছেন এক জন এএসআই-সহ ছ’জন কনস্টেবল। ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ তিনজনকে ধরেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম কান্তিরাম সিংহ, সুক্রকান্ত লাকড়া ও দিলীপ লাকড়া। ধৃতদের বৃহস্পতিবার ইসলামপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক ধৃতদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। যদিও ধৃত অভিযুক্তরা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে।