100 days work

বাগানের নামে কোটি কোটি টাকা লুট? গাজোলে পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তৃণমূলেরই

ফল চাষ করা হয়েছে, এ কথা জানিয়ে সরকারি বোর্ড ঝোলানো হয়েছে। কিন্তু আদতে বাগানই নেই। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদহের গাজোলের বাবুপুর পঞ্চায়েতে। তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গাজোল শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৩৮
Share:

মালদহের গাজোলে ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ। — ফাইল চিত্র।

ফল চাষ করা হয়েছে, এ কথা জানিয়ে সরকারি বোর্ড ঝোলানো হয়েছে। কিন্তু আদতে বাগানই নেই। এমনই অভিযোগ উঠেছে মালদহের গাজোলের বাবুপুর পঞ্চায়েতে। অভিযোগ, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান নার্গিস পারভিন এবং তাঁর সঙ্গীরা মিলে একাধিক সরকারি প্রকল্প থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ নিয়ে মালদহের জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। অভিযোগকারীদের তালিকায় রয়েছে পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যদের একাংশও। জেলাশাসক এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে এই অভিযোগের সূত্র টেনে মালদহের বিজেপির দাবি, গত ৩ বছরে জেলা জুড়ে ২,৩০০ কোটি টাকা চুরি করেছে তৃণমূল। অবশ্য বিজেপির বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে গেরুয়াশিবিরকে অভিযোগ প্রমাণ করার পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে তৃণমূল।

Advertisement

মালদহের গাজোলের বাবুপুর গ্রাম পঞ্চায়েত গত ২০২০-২১ অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে ড্রাগন ফল চাষ এবং কলা চাষের প্রকল্প গ্রহণ করেছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, সরকারি বোর্ড লাগানো হলেও কলা গাছ বা ড্রাগন ফলের চাষ হয়নি। তাঁদের অভিযোগ, এর টাকা আত্মসাৎ করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান নার্গিস এবং পঞ্চায়েতের কর্মীদের একাংশ। ঘটনাচক্রে, অভিযোগকারীদের মধ্যে রয়েছেন ওই পঞ্চায়েতের ৫ সদস্যও। ওই পঞ্চায়েতে মোট ১০টি আসন রয়েছে। সবক’টিই তৃণমূলের দখলে। অভিযোগ, ফল চাষ, পুকুর, আবাস যোজনা, সৌর আলো, সৌন্দর্যায়ন ইত্যাদি নানা প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি টাকা চুরি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মালদহের জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়ার কাছে। এ নিয়ে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন জেলাশাসক।

এই অভিযোগ নিয়ে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাননি বাবুপুর পঞ্চায়েতের প্রধান নার্গিস। তবে তাঁর স্বামী ওবায়দুর হকের কথায়, ‘‘পুরোটাই মিথ্যা অভিযোগ। আমাদে কাছে প্রতিটি প্রকল্পের গাছ লাগানোর ছবি এবং ভিডিয়ো আছে। কোনও জায়গায় গাফিলতি ছিল না।’’ বিষয়টিতে বিরোধীদের ‘চক্রান্ত’ বলে তকমা দিয়েছেন ওবায়দুর।

Advertisement

এই সূত্র ধরেই পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিজেপি অভিযোগ করেছে জেলায় মোট ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চাযেতে গত ৩ বছরে ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। বিজেপির মালদহ জেলার সভাপতি অম্লান ভাদুড়ির অভিযোগ, ‘‘মালদহ জেলায় গত ৩ বছরে প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা তৃণমূল নেতারা এবং প্রশাসনের একটা অংশ কোনও কাজ না করে চুরি করে খেয়েছে। এটা মাঝে মাঝে ধরা পড়েছে। ড্রাগন ফল বা কলা গাছ লাগানো হয়নি। কিছু লোক ব্যক্তিগত ভাবে পুকুর খুঁড়েছেন সেটাও একশো দিনের কাজের মধ্যে দেখানো হয়েছে।’’ এ নিয়ে আমরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বাবুপুর পঞ্চায়েতে লুটপাটের অভিযোগ নিয়ে কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ সাফ বলেন, ‘‘যদি কেউ টাকা আত্মসাৎ করে তা হলে তার জন্য প্রশাসন আছে। দল এর মধ্য়ে থাকবে না। দল বড় হয়েছে। তার মধ্যে অনেকে ঢুকে গিয়েছে, দুর্নীতি করছে। এদের পাশে দল দাঁড়াবে না।’’ তবে তৃণমূল জেলা জুড়ে চুরি করেছে বলে বিজেপি যে অভিযোগ তুলেছে তা নিয়ে কৃষ্ণেন্দুর পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘এ সবই বিজেপির অভিযোগ মিথ্যা। ওরা এ সব আগে প্রমাণ করুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন