Amit Shah

অমিতের কথায় তরজা গৌড়বঙ্গে

অমিতের ওই দুই মন্তব্য ঘিরেই তিন জেলায় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ জুন ২০২০ ০৬:২৬
Share:

ছবি পিটিআই।

‘ফেসবুকে’ সমাবেশে তৃণমূলনেত্রীকে বিঁধে অমিত শাহের বিশেষত দু’টি মন্তব্যে রাজনৈতিক তরজা ছড়াল গৌড়বঙ্গে। মঙ্গলবার ওই অনলাইন সমাবেশে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিএএ-র বিরোধিতা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে শরণার্থী এবং মতুয়াদের বিরোধিতা করছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে যে সব ট্রেন পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে, সেগুলির নাম করোনা এক্সপ্রেস রাখার ফল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে ভুগতে হবে। আপনার দেওয়া ওই নামই আপনার প্রস্থান-পথে পরিণত হবে।’’

Advertisement

অমিতের ওই দুই মন্তব্য ঘিরেই তিন জেলায় বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে তরজা শুরু হয়েছে।

মালদহ ও দুই দিনাজপুর জেলার বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, গৌড়বঙ্গের শরনার্থীদের মধ্যে দলের শীর্ষনেতার ওই মন্তব্য রাজনৈতিক ভাবে লাভ দেবে। গৌড়বঙ্গের ভোট-রাজনীতিতে ওই শরণার্থীরা নির্ণায়ক ভূমিকা নেবেন। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, সিএএ-র নামে একটি সম্প্রদায়ের মানুষকেই বিজেপি দেশ থেকে তাড়াতে চাইছে। তা তৃণমূলনেত্রী মানেননি। সিএএ-র বিরোধিতা করেছেন শুরু থেকে। সেই কারণেই উস্কানিমূলক মন্তব্য করে বিজেপি বিষয়টি নিয়ে জট পাকাতে চাইছে।

Advertisement

তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘যাঁরা এনআরসি করে নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার কথা বলেন, তাঁদের মুখে এ সব মিথ্যা কথা মানায় না। অমিত শাহ আজ ওই সমাবেশ করে পুরোপুরি মিথ্যা কথা বলে গিয়েছেন। এটা গুজরাত নয়, বাংলা। এখানে মিথ্যা চলবে না।’’

বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের পাল্টা মন্তব্য, ‘‘আমরা শরণার্থীদের অধিকারের কথা বলছি। তৃণমূল তার উল্টো বলছে।’’ বিজেপির উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ি বলেন, ‘‘তৃণমূল শরণার্থীদের ভুল বুঝিয়ে সিএএ-র বিরোধিতা করছে। কিন্তু তাতে লাভ হবে না।’’

পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের রাজ্যে ফেরানো নিয়ে অমিতের বক্তব্য ঘিরেও দু’দলের মধ্যে তরজা বেঁধেছে। গৌড়বঙ্গ জুড়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বলছেন, লকডাউন হওয়ায় ট্রেন ও যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু যখন শ্রমিকদের জন্য ট্রেনের কথা বলা হল, তখন আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। গৌড়বঙ্গের জেলাগুলিতে করোনা আক্রান্তদের বেশিরভাগই ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক। তৃণমূলের মালদহ জেলা সভাপতি তথা রাজ্যসভা সাংসদ মৌসম নুর বলেন, ‘‘লকডাউন ঘোষণার আগে যদি ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যবস্থা করা হত, তবে এই পরিস্থিতি দেখতে হত না। বিজেপি পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য কিছু ভাবেনি, তাঁদের কোনও সুবিধাও দেয়নি। বরং ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের এমন সময়ে রাজ্যে ফেরাতে বাধ্য করল যখন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এই রাজনীতি মানুষ বুঝে নিয়েছে। ফলে অমিত শাহ কি বলল, তাতে কিছু যায় আসে না।’’

এ নিয়ে বিজেপির উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশে ১৭০০ ট্রেন গিয়েছে, বিহারে ১৫০০। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে প্রথমে অনীহা দেখালেন। শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনকে করোনা এক্সপ্রেস বলে আখ্যা দিয়ে কার্যত পরিযায়ীদের অপমান করলেন। অমিত শাহ এদিন সঠিক কথাই বলেছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement