নদিয়ায় খারাপ চাল সরবরাহের অভিযোগ নিয়ে তদন্তে নামল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীকে দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে পাঠানো চালের মান নিয়ে নালিশ করেন নদিয়া জেলার খাদ্য নিয়ামক। তারপরেই প্রকাশ্য মঞ্চে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনায় প্রশাসনিক মহলে হইচই পড়ে যায়। সংশ্লিষ্ট দুই জেলার খাদ্য দফতরের ফুড ইন্সপেক্টার এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইন্সপেক্টারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কোনও জেলা থেকে অন্য জেলায় অথবা রেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে চাল সরবরাহের আগে সংশ্লিষ্ট ইন্সপেক্টররা চালের মান খতিয়ে দেখে শংসাপত্র দেন। তারপরই চালের বস্তা ট্রাকে চাপানো হয়। তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই ভুত? বুধবার দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জেলার খাদ্য গুদামে মজুত চালের মান পরীক্ষা করে দেখা হবে।’’
এ দিন দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা খাদ্য নিয়ামক অমরেন্দ্র রায় দাবি করেন, নদিয়ায় সরবরাহ করা ওই চাল দক্ষিণ দিনাজপুরের কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়। বর্ধমান থেকেও সেখানে চাল সরবরাহ করা হয়। তবে গত সপ্তাহে এই জেলা থেকে নদিয়ায় ৭ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন চাল সরবরাহ হয়েছিল বলে অমরেন্দ্রবাবু জানান। তিনি বলেন, ‘‘দুই জেলার সংশ্লিষ্ট কোয়ালিটি কন্ট্রোল ইন্সপেক্টররা খতিয়ে দেখে শংসাপত্র দেওয়ার পর চাল সরবরাহ হয়েছে।’’ জেলা খাদ্য দফতর তদন্ত শুরু করেছে বলে তিনি জানান।
দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে কেবল নদিয়া জেলাই নয়, দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদ এবং উত্তরবঙ্গের কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, মালদহ জেলাতেও চাল সরবরাহ করা হয়। নিম্নমানের চাল সরবরাহের কোনও অভিযোগ কখনও ওঠেনি বলে খাদ্য দফতরের দাবি। তবে দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে এ জেলার চাল গুদামে পড়ে থাকায় লালচে হয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। খাদ্য দফতর সূত্রের খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরে ফি বছর অন্তত ১০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। চালের পরিমাণ ৬ লক্ষ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। বছরে দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীর চালের চাহিদা ৫০ হাজার মেট্রিক টন। অবশিষ্ট চাল জেলার সরকারি গুদামে বছরভর মজুত রেখে প্রয়োজন মতো বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বাংলাদেশেও রফতানি হয়। কোনও বছর চালের রফতানি বিঘ্নিত হলে চাষিরা ধানের দাম কম পান বলে অভিযোগ। বেসরকারি গুদামে জমতে থাকে মজুত চাল।