প্রতীকী ছবি।
চিলা রায়ের জন্মজয়ন্তী পালনের মধ্যে দিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিলেন কামতাপুর-গ্রেটার কোচবিহার মহাজোট মঞ্চ। আলাদা রাজ্যের দাবি কেন্দ্রীয় সরকার মেনে নিলে, আগামী নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন করার আভাসও এ দিন দিলেন নেতারা।
মঙ্গলবার মাথাভাঙার ভোগরামগুড়িতে মহাজোটের পক্ষ থেকে চিলা রায়ের জন্মদিন উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিনিধি সম্মেলন করা হয়। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দি গ্রেটার কোচবিহার পিপল্স অ্যাসোসিয়েশন ও মহাজোটের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ, কামতাপুর পিপল্স পার্টি ও মহাজোটের সম্পাদক দেবেন্দ্রনাথ রায়, গ্রেটার আন্দোলনের নেতা জ্যোতিষচন্দ্র রায়, নস্য শেখ দরবারের সম্পাদক জান্নাতুল হক মণ্ডল, আদিবাসী বিকাশ পরিষদ নেত্রী মালকি কুজুর, রাজবংশী ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রচার সম্পাদক সুবল বর্মণ, ক্ষত্রিয় যুব ধর্ম সমিতির নেতা প্রল্লাদ নায়েক-সহ আরও অনেকে।
সম্মেলনে উপস্থিত নেতারা চিলা রায়ের প্রতিকৃতিতে মাল্যদানের পর পুলওয়ামায় নিহত সেনাদের স্মৃতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এর পর একদিকে রাজবংশী কৃষ্টি, সংস্কৃতি নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়, অন্য দিকে মহাজোটের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি সম্মেলন হয়।
সম্মেলনে মহাজোটের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্রদের কামতাপুর ও রাজবংশী দু’ভাগে ভাগ করে আলাদা রাজ্যের আন্দোলনকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কামতাপুর ও রাজবংশী একই ভাষা বলে দাবি করেন মহাজোটের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ। তিনি বলেন, ‘‘কামতাপুর ও রাজবংশী বলে আলাদা কোনও ভাষা নেই। কিন্তু রাজ্য সরকার আমাদের মধ্যে বিভাজন করার জন্য দু’টি আলাদা আলাদা ভাষা অ্যাকাডেমি গঠন করেছে।’’
তবে রাজ্য সরকার যতই বিভাজনের রাজনীতি করুক কামতাপুর ও গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবি নিয়ে মহাজোটের পক্ষ থেকে সংঘবদ্ধ আন্দোলন করা হবে বলে জানান লক্ষ্মীকান্তবাবু।
এ দিন রাজ্য সরকারকে এক হাত নিলেও, মহাজোটের পক্ষ থেকে কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি সমর্থনের বার্তা দিয়ে লক্ষ্মীকান্তবাবু বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় সরকারকে ঐতিহাসিক কামতাপুর রাজ্যের সীমানা অনুযায়ী আলাদা রাজ্যের যেমন দাবি জানিয়েছি, তেমনই ভারত-ভুক্তি চুক্তি অনুযায়ী গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যেরও দাবি জানিয়েছি। আমাদের যে কোনও একটি আলাদা রাজ্য দেওয়া হোক। পরে আমরা নিজেরাই রাজ্যের নাম ঠিক করে নেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লোকসভা ভোটের আগে আমারা আলাদা রাজ্যের আশ্বাস পেলেই, আমরা সকলে কেন্দ্রীয় সরকারকে সমর্থন করব।’’
একই দাবি কামতাপুর পিপল্স পার্টির সম্পাদক তথা মহাজোটের সম্পাদক দেবেন্দ্রনাথ রায়েরও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের দাবি পূরণ করলে, আমরা বিজেপিকে আগামী লোকসভা ভোটে সমর্থন করব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যদি কেন্দ্র সরকার কোনও রকম আশ্বাস না দেয়, আমরা লোকসভা ভোটের পরই মহাজোটের পক্ষ থেকে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’