প্রতীকী ছবি।
দিন কয়েক আগেই বিজেপি ঘোষণা করেছিল, উত্তরবঙ্গে প্রচার চালাতে অসম এবং ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে আসা হবে উত্তরবঙ্গে। সোমবার থেকে কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে পরপর সরকারি সভাগুলিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসমের বিজেপি সরকারকে পাল্টা নিশানা করেছিলেন। বৃহস্পতিবার রাতে অসমের তিনসুকিয়ায় জঙ্গি হামলা তৃণমূলের আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তাতে খানিকটা হলেও অস্বস্তিতে রেখেছে বিজেপিকে। যে কারণে দলের সদর থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় নেতারা কোনও আলটপকা মন্তব্য করবেন না। পদ্ম শিবিরের এক নেতার কথায়, “দেখা যাক, জল কতদূর গড়ায়। আপাতত এটাই কৌশল।’’ সদ্য শেষ হওয়া পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপির চা বলয়ে ভাল ফল, ইসলামপুর দাড়িভিটে কাণ্ডের পরে কয়েকটি এলাকায় সংগঠন বেশ শক্তিশালী হয়েছে বলে দাবি বিজেপি নেতাদের। তৃণমূলের অসম প্রচারে সংগঠনের পাল থেকে সেই হাওয়া যাতে না কেড়ে নেয়, তা রুখতেই মরিয়া বিজেপি নেতারা।
তৃণমূলও চাইছে, এই সুযোগে হাওয়া যতটা সম্ভব নিজেদের পালে টানতে। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপির বিভেদ নীতির কারণেই অসমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বাসিন্দাদের অস্তিত্ব বিপন্ন। নাগরিক পঞ্জি তৈরি করাই অসমের বিভেদ রাজনীতি উস্কে দিয়েছে বলে অভিযোগ করে পথে নেমেছে তৃণমূল। তার সঙ্গে গুজরাত থেকে হিন্দিভাষীদের বিতাড়ন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেও স্লোগান দিচ্ছে তৃণমূল।
তৃণমূল আগামী এক সপ্তাহ ধরে অসম নিয়ে পথেই থাকছে বলে জানা গিয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের জেলার বাসিন্দাদের অনেক আত্মীয় অসমে থাকে। কেউ এখানে আশ্রয় চাইলে এখানে আসতেই পারে, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই ঘোযণা করেছেন। আমরা প্রতিটা পাড়ায়, বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসমে সরকারি অত্যাচারের কথা জানাব।”
মরিয়া হয়ে এ দিন দুপুর থেকে বিজেপি নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বার্তা ছড়াতে শুরু করেছেন। যাতে বলা হয়েছে, আলফার দুই নেতাকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে অসম সরকার দ্রুত গ্রেফতার করেছে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের দাড়িভিটে ছাত্র মৃত্যুর পরে হাজার ঘণ্টা কেটে গেলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। শিলিগুড়ির সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি অভিজিৎ রায়চৌধুরী বলেন, “তৃণমূল অসম নিয়ে মিছিল করছে। কিন্তু দাডিভিটে ছাত্রদের খুনিরা এখনও ধরা পড়ল না তা নিয়ে তো কিছু বলছে না। এই প্রশ্ন তো মানুষই তুলছে।”
এই পরিস্থিতিতে পুর্ব পরিকল্পনা মতো অসমের মুখ্যমন্ত্রীকে প্রচারে আনা হবে কিনা তা নিয়েও দ্বিধায় বিজেপি নেতারা।