তাণ্ডব: দেওয়ানহাটে রাস্তা আটকে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
দুই পক্ষের লড়াই চলছিল এক মাসেরও বেশি সময় ধরে। গত ছ’দিনে গুলি-বোমার শব্দে তটস্থ হয়ে ওঠে গ্রাম। রাতে তো কেউ বাড়ির বাইরে পা রাখার সাহস পায় না। দিনের বেলাতেও লোক সমাগম আর আগের মতো নেই। বিক্রির জন্য বাজারে আনাজ নিয়ে গিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে অনেককে। কোচবিহারের দেওয়ানহাট নামের ওই বাজার এক সময় গমগম করত, সেই বাজারের এমন ছবি নিয়েই প্রশ্ন তোলেন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা।
তাঁদের কথায়, “তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে আমাদের লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকি অনেক কৃষক আনাজ বিক্রি করতে বাজারে আসতে সাহস পাচ্ছেন না। এমন চলতে থাকলে পুজোর মুখে সংসার নিয়ে আমাদের পথে বসতে হবে।” তাঁদের দাবি, দুষ্কর্ম যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক পুলিশ। তাহলে এই সমস্যা অনেকটা মিটবে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে যদিও বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
যুব তৃণমূলের সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই এখন কোচবিহারের সবার মুখে মুখেই ঘুরে বেড়ায়। দেওয়ানহাটও তার বাইরে নয়। কোচবিহার ১ ব্লকেই পড়ে দেওয়ানহাট গ্রাম পঞ্চায়েত। দেওয়ানহাট জেলায় আনাজের পাইকারি ব্যবসার জন্য বিখ্যাত। সপ্তাহে দু’দিন সকালে বড় ধরনের হাট বসে সেখানে। বিভিন্ন এলাকা থেকে আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, পেঁপে, ঝিঙে, পটল থেকে শুরু করে লাউ ও নানা ধরনের শাক নিয়ে ওই বাজারে যান কৃষকরা। সেখানে কৃষকরা সেই আনাজ পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন। অনেক খুচরো বিক্রেতাও সেই বাজার থেকে জিনিসপত্র কিনে নিয়ে গিয়ে জেলার অন্যত্র বিক্রি করেন। গত কয়েকদিন ধরে তৃণমূলের লড়াইয়ে ওই ব্যবসার বড় ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ।
এ ছাড়া ওই বাজারে স্থায়ী দোকানের সংখ্যাও প্রচুর। সন্ধ্যায় বাজারে কেনাকাটা করতে এলাকার বাসিন্দারা যান। সেই বাজারেও কয়েক দিন ধরে বিক্রি নেই বলে দাবি। দেওয়ানহাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তাদের একজন সুমন দে বলেন, “কিছু দিন থেকেই দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব চলছে।” অভিযোগ, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ওই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচন হয়। তার কয়েকদিন আগে থেকেই বোমা-গুলির আওয়াজে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়।