Mamata Banerjee and Justice Abhijit Gangopadhyay

‘হস্তক্ষেপের দরকার নেই’! বিচারপতির মন্তব্য শুনে সেই গ্রামে জল পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন মমতা

নকশালবাড়ি ব্লকের হাতিঘিষা গ্রাম পঞ্চায়েতের সেবদুল্লা গ্রামে পানীয় জলের অভাবের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ জন্য বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ এস এস অহলুওয়ালিয়াকে দায়ী করেন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

বাগডোগরা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৬:২১
Share:

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিক থেকে)। —ফাইল চিত্র।

প্রায় তিন বছর ধরে জলকষ্টে ভুগছে কয়েকটি পরিবার। এ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের এজলাসে শুনানির সময় বেশ কিছু মন্তব্য করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। দরিদ্র মামলাকারীদের অভিযোগ শোনার জন্য এজলাসে নিজের আসন ছেড়ে উঠে এসেছিলেন বিচারপতি। মঙ্গলবারের ওই ঘটনার কথা কানে যেতেই নকশালবাড়ির গ্রামে জলকষ্ট মেটাতে শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়রকে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বাগডোগরা বিমানবন্দরের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানান, এ নিয়ে এই মুহূর্তে আদালতের হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই।

Advertisement

বস্তুত, ২০১৯ সাল থেকে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের নকশালবাড়ি ব্লকের হাতিঘিষা গ্রাম পঞ্চায়েতের সেবদুল্লা গ্রামে পানীয় জলের অভাবের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, বহু আবেদন এবং নিবেদনের পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয় কিছু পরিবার। মামলাকারীদের অধিকাংশই আদিবাসী চা-শ্রমিক পরিবারের। সোমবার ওই মামলার শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী দাবি করেন, শুনানির দিন এলেই কলে জল চলে আসে। তার পর কোনও অজানা কারণে আর জল পাওয়া যায় না। সমস্যা বুঝতে অভিযোগকারীদের এজলাসে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এ নিয়ে গ্রামবাসীদের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলেন তিনি। সব শোনার পর বুধবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতর, প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদার-সহ আরও কয়েক জনকে দুপুর ২টোর মধ্যে এজলাসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। ওই ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, সরকার এবং প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন আর আদালতকে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে হবে না। মমতার কথায়, ‘‘সমস্যা সমাধানে কিছু সময় লাগবে। এই মুহূর্তে (আদালতের) হস্তক্ষেপের কোনও প্রয়োজন নেই। আমি ক্রসচেক করেছি। ওঁরা ঠিকঠাক ভাবেই পানীয় জল পাবেন। পিএইচই কাজ করছে।’’ পর ক্ষণেই মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘যত দিন না কাজ শেষ হচ্ছে, তত দিনের জন্য ওই গ্রামবাসীদের পুরসভা থেকে পানীয় জলের বিশেষ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পাশে দাঁড়ানো গৌতম দেবকে দেখিয়ে বলেন, ‘‘আমি শিলিগুড়ির মেয়রকে বলেছি, যত দিন না সমস্যা না, তত দিন পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পাঠান ওই গ্রামে। যাতে স্থানীয়রা অসুবিধায় না ভোগেন দেখতে হবে।’’

মামলাকারীদের অভিযোগ, গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে জলকষ্ট। তাঁরা পিএইচই দফতরে আবেদন করায় গ্রামে জলের কল লাগিয়ে দেওয়া হয়। জল সমস্যা মিটে যায়। বাড়ি বাড়ি জলের কানেকশন দিয়ে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টাও শুরু হয়। কিন্তু তার পর আবার সমস্যা শুরু হয়। আবার পানীয় জলের অভাব শুরু হয়। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ এস এস অহলুওয়ালিয়াকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় আমি মেয়র গৌতম দেব এবং জেলাশাসকের কাছে বিষয়টি নিয়ে খবর নিয়েছি। আহলুওয়ালিয়া ওই গ্রাম ‘অ্যাডপ্ট’ করেছিলেন। কাউকে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না। কিন্তু তার পর তাঁর দায়িত্ব পালন করেননি। ফলে ওখানে একটা ক্রাইসিস চলছিল।’’ মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘পিএইচই এখন ব্যাপারটা দেখছে। যত দিন না সেই কাজ শেষ হবে, তত দিন পুরসভাকে বলেছি, ট্যাঙ্কে করে ওঁদের জল পাঠাতে।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন