কনভয় থামিয়ে পাট্টার আর্জি নিলেন মুখ্যমন্ত্রী 

মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এ দিন চিঠিটি  দিতে পেরে সুজাতা মণ্ডল, ফুলেশ্বরী রায়, বাসনা বর্মণের মতো মহিলারা তো বটেই, খুশি বহু স্থানীয়রাও। ওই বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, গত বছরেও কনভয় থামিয়ে তাঁদের কথা শুনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০১:৫৫
Share:

পথের-দাবি: ‘দিদি দাঁড়ান’ ডাক শুনে মঙ্গলবার গাড়ি দাঁড় করােলন মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র

মঙ্গলবার দুপুরে সার্কিট হাউস থেকে সুনীতি রোড ধরে এগোচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। গন্তব্য রাজবাড়ি স্টেডিয়াম চত্বরে তৈরি অস্থায়ী হেলিপ্যাড। যাত্রাপথে হরিশ পাল চৌপথীর কাছে লিচুতলায় সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ওই মহিলারা। তাঁদের হাতে ছিল সাদা কাগজে লেখা পোস্টার, ‘বঙ্গমাতা স্বাগতম’। কনভয় লিচুতলার কাছাকাছি আসতেই ওই মহিলাদের থেকেই আওয়াজ ওঠে, ‘দিদি, দাঁড়ান দিদি’। গাড়ি থেকে মুখ্যমন্ত্রীও তাঁদের দেখেন। মূহূর্তেই দাঁড়িয়ে পড়ে মমতার কনভয়। নিরাপত্তা রক্ষীরা গাড়ির সামনে চলে আসেন। তার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে জমির পাট্টার আর্জি সম্বলিত খামে ভরা চিঠিটি তুলে দেন।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর হাতে এ দিন চিঠিটি দিতে পেরে সুজাতা মণ্ডল, ফুলেশ্বরী রায়, বাসনা বর্মণের মতো মহিলারা তো বটেই, খুশি বহু স্থানীয়রাও। ওই বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, গত বছরেও কনভয় থামিয়ে তাঁদের কথা শুনেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে লিখিত ভাবে গতবার কিছু জানানো যায়নি। এ বার সেটা হল।

স্থানীয় বাসিন্দা সুজাতা বলেন, “সকাল ন’টা থেকে দিদিকে আমাদের সমস্যার কথা জানাতে রাস্তার পাশে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। মুখ্যমন্ত্রী কনভয় থামিয়েছিলেন। পাট্টার আর্জি জানিয়ে একটি চিঠিও মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যাপারে উনি আশ্বাস দিয়েছেন।” আর এক বাসিন্দা ফুলেশ্বরী রায় বলেন, “আমাদের মতো অনেক পরিবার কয়েক দশক ধরে লিচুতলা ও লাগোয়া এলাকায় বসবাস করছেন। জমির পাট্টা না থাকায় নানা সমস্যা হচ্ছে। এ দিনও ওই সমস্যা মেটানোর ব্যাপারেই আর্জি জানানো হয়েছে।”

Advertisement

কোচবিহার পুরসভা এলাকার লিচুতলার ওই বাসিন্দাদের বাড়ি ২০ নম্বর ওয়ার্ডে। কিন্তু জমির পাট্টা নেই। অথচ সংশ্লিষ্ট দফতরের উদ্যোগে অনেক দিন আগেই মাপজোক করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় নথিপত্রও বাসিন্দারা জমা দিয়েছেন বলে বাসিন্দাদের সূত্রেই দাবি করা হয়েছে। ২০১৮ সালে ২৯ অক্টোবর ওই রাস্তা দিয়ে সার্কিট হাউসে যাচ্ছিল মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। তখনও মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানানো হয়। পরে নিয়ম মেনে আবেদনও করা হয়। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি। কর্মসূচিতে তৃণমূলের পতাকাও দেখা যায়। তাঁরা বলেন, “এ বার দিদি আশ্বাস দিয়েছেন, এ বার কাজ হবেই।”

ওই ইস্যুতে বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানান বিরোধীরাও। কোচবিহার পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর পার্থপ্রতিম সেনগুপ্ত বলেন, “বাসিন্দাদের ওই দাবি যুক্তিযুক্ত। ওই ব্যাপারে পুরসভা কর্তৃপক্ষের গড়িমসি আছে।” একই সঙ্গে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ভূমিকাও দেখার দাবি জানান তিনি।

কোচবিহার পুরসভার তৃণমূল পুরপ্রধান ভূষণ সিংহ বলেন, “বামেদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। আশা করছি এক মাসের মধ্যে ওই জমিতে যাঁদের নাম রয়েছে, তাঁদের পাট্টা বিলির কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।” প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন