Kaliyaganj State General Hospital

জটিল অস্ত্রোপচারে মাতৃত্বের ইচ্ছাপূরণ কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেলে

বন্ধ্যাত্বকরণের পরেও মাতৃত্ব লাভের ইচ্ছা হয়েছিল আরও দুই মহিলার।

Advertisement

গৌর আচার্য 

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৩২
Share:

তখনও চলছে অস্ত্রোপচার। নিজস্ব চিত্র

জরায়ু থেকে রক্তক্ষরণের সমস্যায় ভুগছিলেন এক মহিলা। বন্ধ্যাত্বকরণের পরেও মাতৃত্ব লাভের ইচ্ছা হয়েছিল আরও দুই মহিলার। কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে বুধবার অস্ত্রোপচারে ওই তিন মহিলার সমস্যা মেটানো হয়— এমনই দাবি উত্তর দিনাজপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতরের।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথ প্রধান জানান, রক্তক্ষরণের সমস্যা মেটাতে এক মহিলার জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারে অন্য দুই মহিলার প্রজনন-ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘জেলায় এই প্রথম কোনও সরকারি হাসপাতালে এমন জটিল অস্ত্রোপচার সফল ভাবে করা হল।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ওই তিন মহিলার নাম পূর্ণিমা সরকার, লক্ষ্মী মাহাতো ও গীতা দাস। পূর্ণিমার বাড়ি কালিয়াগঞ্জ শহরের চিড়াইলপাড়া এলাকায়। লক্ষ্মীর বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমণ্ডি ও গীতার বাড়ি হেমতাবাদে।

Advertisement

কালিয়াগঞ্জ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের সুপার প্রকাশ রায় জানিয়েছেন, পূর্ণিমা জরায়ুতে রক্তক্ষরণের সমস্যায় ভুগছিলেন। ছ’মাস আগে তিনি ওই হাসপাতালের বহির্বিভাগে প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞকে দেখান। চিকিৎসকের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধও খাচ্ছিলেন। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। এই অবস্থায় কয়েক দিন আগে চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করান। সেই পরীক্ষায় তাঁর জরায়ুতে টিউমার ধরা পড়ে। এরপরেই হাসপাতালের তরফে ওই মহিলার জরায়ুতে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রকাশ জানান, অস্ত্রোপচারে ওই মহিলার জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক আরও জানান, তিন বছর আগে সাপের ছোবলে লক্ষ্মীর এক মাত্র ছেলের মৃত্যু হয়। কয়েক বছর আগে অসুস্থ হয়ে গীতারও এক ছেলে ও এক মেয়ের মৃত্যু হয়। লক্ষ্মী পুত্রসন্তানের জন্মের পর বন্ধ্যাত্বকরণ করিয়েছিলেন। গীতাও দুই সন্তানের প্রসবের পরে বন্ধ্যাত্বকরণ করে নেন। ফলে সন্তানদের মৃত্যুর পরে তাঁরা ফের মা হতে পারছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগে ওই দুই মহিলা হাসপাতালে গিয়ে ফের সন্তান পেতে চান বলে আবেদন জানান। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রজনন ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

রবীন্দ্রনাথ জানান, অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ওই দুই মহিলার ‘ফেলোপিয়ান টিউব’ ফের জুড়ে দিয়ে প্রজনন ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ওই তিন মহিলার সফল অস্ত্রোপচার করেছেন শল্যরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনন্দময় মুখোপাধ্যায়। অ্যানাসস্থেটিস্ট ছিলেন ওই হাসপাতালের চিকিৎসক পীযূষকান্তি চৌধুরী ও

রঞ্জিতা সরকার।

পূর্ণিমা, লক্ষ্মী ও গীতার কথায়— ‘‘লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে আমাদের পক্ষে ওই অস্ত্রোপচার করা সম্ভব ছিল না। সরকারি হাসপাতালে এসে সব সমস্যা মিটল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন