গ্রেফতার, জামিন নিয়ে দিনভর উত্তেজনা

সোমবার রাতভর থানাতেই ছিলেন তাঁরা। যদিও পুলিশের দাবি, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৩৫
Share:

থানায় আদালত। মঙ্গলবার ইসলামপুরে। —নিজস্ব চিত্র।

মহকুমা শাসকের দফতরের সমানে ১৪৪ ধারা ভেঙে আন্দোলন করার জন্য বিধায়ক ইমরান আলি রমজ (ভিক্টর) এবং কৃষকদের গ্রেফতার করা হয়। সোমবার রাতভর থানাতেই ছিলেন তাঁরা। যদিও পুলিশের দাবি, তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

Advertisement

তবে বিধায়ক তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ‘‘ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ থানায় নিয়ে এসেছে। নিয়ম মাফিক জামিন দিতে হবে। না হলে রাস্তা অবরোধ করে বড় ধরনের আন্দোলন হবে।’’ মঙ্গলবার ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দিনভরই চাপের মুখে পড়তে হয় প্রশাসনকে। এ দিন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অনামৃত সোম তাঁদের জামিন দেন বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়।

বাইপাসের জমিহারা কৃষকদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়। নেতৃত্ব দেন চাকুলিয়ার বিধায়ক আলি ইমরান রামজ (ভিক্টর)। বিক্ষোভের দু’দিনের মাথায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। রবিবার মহকুমাশাসক আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বৈঠক করতে চাইলেও ছুটির দিন বলে বসতে চাননি কৃষকেরা। সোমবারও কোনও রকম আলোচনা হয়নি। ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অনামৃত সোম। বিধায়ক-সহ আন্দোলনরত কৃষকদের গ্রেফতার করা হয়। ছিলেন কংগ্রেসের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি হাজি মুজাফ্ফর হোসেন, ডিওয়াইএফ নেতা সামি খান-সহ অনেকেই। রাতে তাঁদের সঙ্গে দেখা করেন রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম। তবে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া বিধায়ককে কী ভাবে গ্রেফতার করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভিক্টর। তিনি বলেন, ‘‘স্পিকারকে জানাব যাতে তিনি বিষয়টি বিধানসভায় তোলেন।’’

Advertisement

অভিযোগ, সোমবার তাঁদের গ্রেফতার করা হলেও রাতে থানায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল না। বাধ্য হয়ে সামিয়ানা খাটিয়ে তাঁরা থানায় বসে রাত কাটান। প্রশাসন অমানবিক ব্যবহার করে। মহকুমাশাসক সোমবারও দেখা করার সৌজন্য বোধ করেননি। বিধায়ক বলেন, ‘‘প্রশাসনের কোনও দয়া আমরা নিতে চাই না। তাই গ্রেফতার করে আদালতে পাঠাতে বলা হয়। তা করা হয়নি। পরে আলোচনা করে জানান থানাতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বসাবেন।’’

এসডিপিও জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বসিয়ে জামিন দেওয়া হয়। মহকুমাশাসকের দফতরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অনামৃত সেন বলেন, ‘‘যারা ১৪৪ ধারা অমান্য করেছেন তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তা জামিনযোগ্য।’’ জমি জটিলতায় বারবার বাইপাসের কাজ আটকে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে জটিলতা কাটাতে দায়িত্ব দেওয়া হয় পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে। কৃষকদের সঙ্গে আলোচনার পর ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বাইপাস তৈরির কাজ শুরু হয়। অথচ এখন ক্ষতিপূরণ পাননি বলে আন্দোলনে নামে কৃষকেরা।

ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর দিনাজপুর জেলা সম্পাদক গোকুল রায় বলেন, ‘‘আমাদের বিধায়ক এবং চাষিদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করেছে। চাষিদের পাশে দল রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমিদাতাদের ন্যায্য মূল্য দেওয়ার দাবিতে বৃহৎ আন্দোলন হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement