দাবি: কমিটির নাম নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে সাংবাদিক বৈঠক। নিজস্ব চিত্র
কামতাপুরি ভাষার স্বীকৃতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে কমিটি গড়েছে রাজ্য সরকার। সেই কমিটির নাম নিয়ে আপত্তি তুললেন জলপাইগুড়ির তৃণমূলের সাংসদ-সহ কয়েকজন নেতা। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবসের দিন রাজ্য সরকার কমিটি গঠনের ঘোষণা করেন। কমিটির নাম রাখা হয়, ‘এক্সপার্ট কমিটি ফর কামতাপুরি (রাজবংশী) ল্যাঙ্গুয়েজ’।
ইতিমধ্যেই অসম সহ এ রাজ্যের একদল বুদ্ধিজীবী মঞ্চ গঠন করে তাঁদের আপত্তি তুলে ধরেন। তাঁদের দাবি, রাজবংশী কথাটি ব্র্যাকেটে লেখা ঠিক হয়নি। শনিবার জলপাইগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে কমিটি দাবি করে, কামতাপুরি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হলে তাঁরা আইনের দ্বারস্থ হবেন। কামতাপুরির সঙ্গে রাজবংশী ভাষাকে জুড়ে দেওয়া ঠিক হয়নি বলে জানিয়ে কমিটির নাম পরিবর্তনেরও দাবি তোলেন তাঁরা।
এ দিনের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির তৃণমূল সাংসদ বিজয় চন্দ্র বর্মন ও জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ধর্তিমোহন রায়ও। তাঁরা অবশ্য বৈঠকের মঞ্চে কোনও বক্তব্য পেশ করেননি। বৈঠকের শেষে নিজেদের সহমতের কথা জানিয়েছেন।
মঞ্চের তরফে অধ্যাপক সত্যেন্দ্রনাথ বর্মনের অভিযোগ, কামতাপুরি ভাষা নামে কোন ভাষা সরকারি রেকর্ডেও নেই৷ দেশি-বিদেশি গবেষকরা রাজবংশী ভাষার ব্যবহার করেছেন৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই ভাষার স্বীকৃতি যদি দিতেই হয়, তাহলে রাজবংশী ভাষা নামেই সেটা দেওয়া হোক৷’’ অধ্যাপক নিখিল রায় বলেন, ‘‘রাজবংশী ভাষাকে কেন বলা হচ্ছে কামতাপুরি ভাষা? আমরা চাই, রাজবংশী ভাষা নামেই এই ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক৷’’
অসমের শিলচর থেকে আসা অধ্যাপক জ্যোতির্ময়ী প্রধানী বলেন, ‘‘আমাদের মুখের ভাষাকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সে জন্যই শিলচর থেকে ছুটে এসেছি৷’’
সাংবাদিক বৈঠকে কিছু না বললেও সাংসদ বিজয়বাবু পরে বলেন, ‘‘রাজ্যের কমিটি গঠনের সময়ই সরকারকে আমরা চিঠি লিখে জানাই, এই সরকারের আমলেই যখন রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি গঠন হয়েছে, তখন কমিটিতে কামতাপুরি শব্দটা না থাকাই বাঞ্ছনীয়৷’’ অন্যদিকে, ধর্তিমোহনবাবুর যুক্তি, ‘‘আমরা চাই কামতাপুরি শব্দটা রাজ্যের কমিটির নাম থেকে বাদ যাক৷ ভাষার নাম রাজবংশীই হোক৷’’
সরকারি সিদ্ধান্তে দলের দুই নেতার আপত্তি প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করব।’’