ফ্রন্টে নেই পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন

ইউনাইটেড ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল গত ৯ই জুলাই। ফ্রন্টে গ্রেটার কোচবিহার অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও ইন্ডিয়ান রিপাবলিক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, গোর্খা ইউনাইটেড লিবারেশন ও আদিবাসীদের একাধিক সংগঠন ফ্রন্টে যোগ দেয়৷ উদ্দেশ্য  ছিল, উত্তরবঙ্গের ছয় ও অসমের চারটি জেলা নিয়ে পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মাথাভাঙা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

দি গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশনের সমর্থকেরা।ফাইল চিত্র

শুরুতেই হোঁচট। গ্রেটার কোচবিহার নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করার জন্য গঠিত ফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে এল দি গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন।

Advertisement

ইউনাইটেড ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল গত ৯ই জুলাই। ফ্রন্টে গ্রেটার কোচবিহার অ্যাসোসিয়েশন ছাড়াও ইন্ডিয়ান রিপাবলিক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট, গোর্খা ইউনাইটেড লিবারেশন ও আদিবাসীদের একাধিক সংগঠন ফ্রন্টে যোগ দেয়৷ উদ্দেশ্য ছিল, উত্তরবঙ্গের ছয় ও অসমের চারটি জেলা নিয়ে পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা।

১২ সেপ্টম্বর দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশনের কোচবিহারের ভারতভুক্তি দিবস পালন অনুষ্ঠানে প্রথম প্রকাশ্য আলোচনায় বসে ইউনাইটেড ফ্রন্টের বিভিন্ন সংগঠনগুলি। দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কোচবিহার জেলা শাসকের মাধ্যমে স্বারকলিপিও প্রদান করে তারা। কিন্তু লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা নিয়ে মতানৈক্য হওয়ার পর, গত বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে নিজ বাসভবন মাথাভাঙার ভোগরামগুড়িতে একটি জরুরী বৈঠক ডাকে। সেই বৈঠকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির পুনর্গঠন ও গোর্খা, আদিবাসী, রাজবংশী ইউনাইটেড ফ্রন্ট নিয়ে আলোচনা হয়। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক পবিত্র বর্মণ, নব নির্বাচিত সহ সভাপতি যদুনাথ রায় ও সহ সম্পাদক সুভাষ বর্মণ, আহ্বায়ক পরেশ চন্দ্র রায়, কোষাধ্যক্ষ সুবল বর্মন, প্রচার সম্পাদক দীপক বর্মণ-সহ কেন্দ্রীয় কমিটির ১২ জন সদস্য। বৃহস্পতিবারের কেন্দ্রীয় কমিটির জরুরি বৈঠকে ইউনাইটেড ফ্রন্ট থেকে নিজেদের সংগঠন নিয়ে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে শনিবার সকালে সাংবাদিকদের ডেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ।

Advertisement

ইউনাইটেড ফ্রন্টের নেতাদের স্বৈরাচারী মনোভাবেই ফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘ইউনাইটেড ফ্রন্টের প্রথম প্রকাশ্য অনুষ্ঠান কোচবিহারে ফ্রন্টের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে লোকসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আমরা উত্তরবঙ্গের জনজাতি নিয়ে আন্দোলন করছি দীর্ঘদিন ধরে। ফলে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা আমাদের সংগঠনের নীতি বিরুদ্ধ কাজ।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আমাদের সংগঠন এক সময় বিভক্ত হয়। বংশীবদনবাবু একটি আলাদা সংগঠন তৈরি করেন। তবুও আমরা আমাদের নীতি থেকে সরে আসেনি।’’ ইউনাইটেড ফ্রন্টের এই সিদ্ধান্তে ঐক্যমত্য না হওয়ায় দলের জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। সেই বৈঠকে ফ্রন্ট থেকে বেড়িয়ে আসার মত দেয় সকলে, বলে জানান গ্রেটার কোচবিহার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ।

পৃথক গ্রেটার কোচবিহার রাজ্যের দাবিতে এককভাবেই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে মত অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের। গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশনের দাবিকে ভিত্তি করেই গোর্খা, আদিবাসী, রাজবংশী ইউনাইটেড ফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল। সেই ফ্রন্ট থেকে গ্রেটার কোচবিহার পিপল্স অ্যাসোসিয়েশন বেরিয়ে আসায়, ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এনিয়ে গোর্খা, আদিবাসী, রাজবংশী ইউনাইটেড ফ্রন্টের সভাপতি রেসিকা ছেত্রীকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে গ্রেটার কোচবিহার পিপল্‌স অ্যাসোসিয়েশন ফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে আসলেও, তার প্রভাব পড়বে না বলে দাবি ফ্রন্টের সম্পাদক বিপ্লব বর্মণের। তিনি বলেন, ‘‘ফ্রন্টে উত্তরবঙ্গের অনেক সংগঠন রয়েছে। তাই ওঁরা না থাকলেও আমাদের আন্দোলনে কোনও প্রভাব পড়বে না। আমরা বাকি সংগঠনগুলিকে নিয়েই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাব পৃথক রাজ্যের জন্য।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন