Cooch Behar

Pilgrim Death: ডিজে বাজাতে গাড়িতে জেনারেটর! বৃষ্টিতে ভিজে কোচবিহারে সেটিই কাড়ল ১০ পুণ্যার্থীর প্রাণ

শীতলখুচি থেকে যাচ্ছিলেন পুণ্যার্থীরা। কিন্তু বিপত্তি ঘটে কোচবিহারের চ্যাঙড়াবান্ধায়। গাড়িতে থাকা জেনারেটরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন অনেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শীতলখুচি শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০২২ ১২:২৪
Share:

পিক আপ ভ্যানে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত ১০। — নিজস্ব চিত্র।

প্রবল বৃষ্টির মধ্যে গাড়িতে জেনারেটর চালিয়ে ডিজে বাজানোই কি শেষ পর্যন্ত কাল হল? কোচবিহারের শীতলখুচি থেকে জলপাইগুড়ির জল্পেশের শিব মন্দিরের রওনা পুণ্যার্থীদের মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এই তত্ত্বই উঠে আসছে। রবিবার রাতে ওই দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এমনটা মনে করছেন তদন্তকারীরাও।

Advertisement

রবিবার সন্ধ্যায় কোচবিহারের শীতলখুচির বিভিন্ন পাড়া থেকে জল্পেশ মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেন ৩৬ জনের একটি দল। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল এবং কলেজের পডুয়া। জনা কয়েক স্কুল এবং কলেজ ছুটও ছিলেন ওই দলটিতে। তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল, সোমবার ওই মন্দিরে পুজো দেওয়া। ঘণ্টা দু’য়েকের রাস্তা। পিক আপ ভ্যানে মনোরঞ্জনের জন্য রাখা ছিল ডিজে। আর তা বাজানো হচ্ছিল ক্ষমতাশালী জেনারেটর দিয়ে। গাড়িতে ওঠার পর গানের তালে মাথা দোলাতে দোলাতে যাচ্ছিলেন পুণ্যার্থীরা। কিন্তু বিপত্তি ঘটে কোচবিহারের চ্যাঙড়াবান্ধায় ধরলা নদী পেরোনোর সময়। আচমকা চিৎকার শুরু করেন যাত্রীরা। চালক সেই চিৎকার শুনে গাড়ি থামিয়ে দেন। এর পর তিনি জেনারেটর বন্ধ করেন। কিন্তু তত ক্ষণে যা ঘটার তা ঘটে গিয়েছে। গাড়ির অনেকেই তখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় চ্যাঙড়াবান্ধা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেখানে চিকিৎসকরা ১০ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি ১৪ জনকে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি আকাশচন্দ্র বর্মণ নামে ওই দলের এক সদস্য। তিনি বলেন, ‘‘ডিজে বাজাতে বাজাতে আমরা জল্পেশ মন্দিরের উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই দেখলাম, গাড়ির যেখানে হাত দিচ্ছি সেখানে শক লাগছে। এর পর পিক আপ ভ্যানের চালক তাড়াতাড়ি গাড়ি থামান। জেনারেটর বন্ধ করেন। আমাদের চ্যাংড়াবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চ্যাংড়াবান্ধা হাসপাতাল থেকে আমাকে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে শুনতে পেলাম, আমাদের ১০ জন সঙ্গী মারা গিয়েছে।’’

Advertisement

সেই পিক আপ ভ্যান এবং জেনারেটর। — নিজস্ব চিত্র।

ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, রবিবার দিন ভর বৃষ্টি চলছিল। তার মধ্যে জেনারেটর চালিয়ে ডিজে বাজানোই ‘কাল’ হয়েছে। সেখান থেকে শর্ট সার্কিট হয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ ১০ জনের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। শীতলখুচির বাসিন্দা শুভঙ্কর বর্মণ, স্বপন বর্মণ, বাদল বর্মণ, বিশাল তিরকি, বিভাস বর্মণ, বিক্রম বৈশ্য, বাপি বর্মণ, লক্ষ্মণ বর্মণ এবং সুশান্ত বর্মণের মৃত্যু হয়েছে ওই দুর্ঘটনায়। নিহতদের সকলেরই বয়স ১৬ থেকে ১৮-র মধ্যে।

এক রাতে একই এলাকার ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় জোরালো ‘ধাক্কা’ খেয়েছে শীতলখুচি। টুম্পা রায় নামে সেখানকার এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘একসঙ্গে এত জন মারা গেল। এ তো ভাবাই যায় না! আমার স্বামী এবং ভাইপো ওই দলে ছিল। তারা হাসপাতালে ভর্তি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন