—ফাইল চিত্র।
মালদহে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছেই। বৃহস্পতিবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১১ জন, ফলে সংখ্যা বেড়ে হল ১৩৮। তবে পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশাপাশি এ বার কোভিড হাসপাতালের এক নার্সের লালারসেও সংক্রমণ মিলল। এতে স্বাস্থ্য দফতরের দুশ্চিন্তা বাড়ল। বৃহস্পতিবার রাতে রিপোর্ট আসে।
একেই জেলায় সংক্রমণ বাড়ছে, তার উপরে দেশের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রাজ্য, মহারাষ্ট্র থেকে একের পর এক ‘শ্রমিক স্পেশাল’ ট্রেন ঢুকছে। দিল্লি, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা, চেন্নাই থেকেও শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মালদহে অন্তত ২২টি ট্রেন থেমেছে। এর মধ্যে ৬টি ট্রেন মালদহ স্টেশন পর্যন্ত এসেছে। বাকিগুলি নিউ কোচবিহার, নিউ জলপাইগুড়ি, কাটিহার এবং অসমগামী ট্রেন ছিল। অন্তত দু’হাজার শ্রমিক নেমেছেন। রাতে আরও শ্রমিক স্পেশাল মালদহ স্টেশনে ঢোকার কথা। এ দিকে, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা এই বিপুল সংখ্যক শ্রমিকদের লালারস সংগ্রহ আর করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, স্টেশনে শুধু থার্মাল স্ক্রিনিং করে তাঁদের বাধ্যতামূলক ভাবে পাঠানো হচ্ছে সরকারি কোয়রান্টিনে। প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট। তবে যে সমস্ত শ্রমিকদের উপসর্গ দেখা যাচ্ছে তাঁদের লালারস সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে খবর। এ দিকে, মালদহ মেডিক্যালের ভাইরোলজি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ব্যাকলগও কমছে না। ফলে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের শিরে সংক্রান্তি অবস্থা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির বড় কারণ পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরা।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা পর্যন্ত জেলার ১০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মানিকচকের তিন জন, ইংরেজবাজারের তিন জন এবং চাঁচল ১, রতুয়া ১, কালিয়াচক ১ ও গাজলের এক জন করে রয়েছেন। গাজলের আক্রান্ত বাদে সকলেই পরিযায়ী শ্রমিক। ২০ তারিখ তাদের লালারসের নমুনা গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাস থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। গাজলের শঙ্করপুরের বাসিন্দা আক্রান্ত নার্স অবশ্য বীরভূমের একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। উচ্চতর নার্সিং ট্রেনিং নিতে মালদহ মেডিক্যালে এসেছিলেন। তাঁকে কোভিড হাসপাতালে ডিউটি দেওয়া হয় বলে স্বাস্থ্য দফতর জানায়। বুধবার কোভিড হাসপাতালে সাত দিনের ডিউটি শেষ হয় এবং বৃহস্পতিবার থেকে তিনি ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে ছিলেন ইংরেজবাজারের বিবেকানন্দ যুব আবাসে।
আরও জানা গিয়েছে, শুক্রবার হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের এক বাসিন্দা সংক্রমিত হয়েছেন। তবে তিনি এখন কলকাতায়। সেখানেই তাঁর নমুনা পজ়িটিভ আসে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তাঁদের শারীরিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোভিড হাসপাতাল ও কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।’’