রানিডাঙা এসএসবি ক্যাম্পের সামনে। বুধবার। নিজস্ব চিত্র
প্রথমে জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার। সেখানে ঠিক হয়, এর পর বসা হবে জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে। সেই মতো সন্ধ্যায় আসেন জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙের জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা। এসএসবি গেস্ট হাউজে বসে সকলের সঙ্গে দিনভর দফায় দফায় বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা। এরই মাঝে বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকের পরে তাঁরা জানিয়ে দেন, উত্তরবঙ্গে তাঁরা যে কাজের জন্য এসেছেন, তাতে রাজ্য সবরকম সহযোগিতা করছে। রাজ্যের তরফেও কেন্দ্রকে বলা হয়, প্রতিনিধিদের সাহায্য করা হবে। আজ বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনে বার হতে পারে বলেও প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।
পরিদর্শন যে শুরু হবে, তার ইঙ্গিত অবশ্য মঙ্গলবার বিকেলেই মিলেছিল। তখনই কলকাতায় থাকা দলটি পুলিশের সাহায্যে রাস্তায় বার হয়েছিল। উত্তরবঙ্গের দলটি অবশ্য মঙ্গলবার কোথাও বার হয়নি। বুধবার বেলা ১ টা নাগাদ সেখানে পৌঁছন জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনার অজিতরঞ্জন বর্ধন। এক ঘণ্টা কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। এর পরেই কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যদের একাংশ জানান, রাজ্য সরকার তাঁদের সঙ্গে সমস্ত সহযোগিতা করছে। বলেন, ‘‘আমরা সন্তুষ্ট।’’ এ দিনই সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও তাঁরা বৈঠক করেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন মানবসম্পদ উন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব বিনীত জোশী। অন্যরা হলেন জনস্বাস্থ্য দফতরের শিবানী দত্ত, অজয় গঙ্গোয়ার, ধর্মেশ মাকওয়ানা, এনবি মানি।
মুখ্যসচিবও এদিন জানান, উত্তরবঙ্গে যে প্রতিনিধিদল গিয়েছে, বিভাগীয় কমিশনার গিয়ে তাঁদের প্রয়োজনীয় সমস্ত তথ্য দিয়েছেন। তাঁদের খুব বেশি ঘোরার ব্যাপার নেই বলে জানিয়েছেন। তাঁরা কোথাও যেতে চাইলে ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে, স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যসচিব। তবে পুরো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েই যেন তাঁরা ঘোরেন, তা কেন্দ্রীয় দলটিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিধিদলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কয়েকটি জায়গায় তাঁরা ঘুরবেন। কোথায় কোথায় যাবেন, তা তাঁরা আলোচনা করে ঠিক করবেন।
এ দিন বিভাগীয় কমিশনারের সঙ্গে কী আলোচনা হল? প্রতিনিধিদলের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলি, বিশেষ করে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি জেলার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এখানে কী ভাবে লকডাউন কার্যকর হয়েছে, কতগুলো ‘হটস্পট’, ‘কনটেনমেন্ট জ়োন’ রয়েছে, তা জানতে চায় প্রতিনিধিদলটি। রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কত জন আক্রান্ত রোগী, কত জন আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি রয়েছেন, তা-ও বিস্তারিত শোনেন তাঁরা। কোথায় কোথায় কোয়রান্টিন এবং আইসোলেশনের ব্যবস্থা রয়েছে, কোন কোন এলাকা ‘সিল’ করা হয়েছে, বাজারগুলির অবস্থা কেমন, লকডাউন নিয়ে প্রশাসনের কাছে রোজ কী ধরনের রিপোর্ট আসছে, সব তথ্য নেন তাঁরা। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন থেকে আলাদা করে রিপোর্টও চান। সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে যে আলোচনা হবে, তা ঠিক হয় দুপুরের বৈঠকেই। প্রতিনিধিদল সূত্রে খবর, তাঁরা যা তথ্য পেয়েছেন, তাতে এখানে খুব বেশই ‘কেস’ নেই। যাঁরা কোয়রান্টিনে আছেন, তাঁরাও ভালর দিকে। তাঁদের অনেককেই কিছু দিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার কথা।