Coronavirus

থার্মাল ক্রিনিংও হয়নি, ছড়াচ্ছে আতঙ্ক

পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার এমন অব্যবস্থায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা ইংরেজবাজারের নরহাট্টা পঞ্চায়েত এলাকাতেই।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০২:৫৭
Share:

ছবি পিটিআই

চিত্র ১: প্রায় চার লক্ষ টাকায় দু’টি বাস ভাড়া করে তেলঙ্গানার জানগাঁও থেকে রবিবার সকালে মালদহে এসে পৌঁছন ৫০ জন শ্রমিক। গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে তাঁরা নামেন। কিন্তু অভিযোগ, কোনও স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় তাঁদের থার্মাল স্ক্রিনিং পর্যন্ত হয়নি। তাঁরা হেঁটেই বাড়ির দিকে রওনা দেন। পরে পুলিশের সাহায্যে ট্রাকে করে নিজেদের গ্রাম সাতঘরিয়ার কাছেই মহানন্দা নদীর পাড়ে বুধিয়া কোলহা এলাকায় একটি আমবাগানে আশ্রয় নেন। অভিযোগ, ব্লক প্রশাসন বা পঞ্চায়েত, কেউই তাঁদের কোয়রান্টিনে পাঠাতে উদ্যোগী হয়নি।

Advertisement

চিত্র ২: কেউ এসেছেন মহারাষ্ট্র থেকে, কেউ বা ঝাড়খণ্ড থেকে। এমন ২৭ জন পরিযায়ী শ্রমিক গত তিনদিন ধরে সাতঘরিয়া পিপি প্রাইমারি স্কুলের সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। কিন্তু সেখানে নিম্নমানের খাবার দেওয়ায় বিক্ষুব্ধ মানোয়ার শেখ, জব্বার আলিরা রবিবার সকালে বাড়ি চলে যান। তাঁরা জানালেন, তিনদিন আগে গৌড়কন্যা বাস টার্মিনাসে এলে তাঁদের শুধু থার্মাল স্ক্রিনিং হয়েছিল। কিন্তু এখনও লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভাইরোলজি ল্যাবে প্রায় দু’হাজারেরও বেশি নমুনা জমে থাকায় তিন দিন ধরে ভিন্‌ রাজ্য ফেরত শ্রমিকদের লালারসের নমুনা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাঁদের সরকারি কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষা হবে।’’

Advertisement

পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষার এমন অব্যবস্থায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা ইংরেজবাজারের নরহাট্টা পঞ্চায়েত এলাকাতেই। জানগাঁও থেকে ফেরা শ্রমিক মোবারক হোসেন বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা সচেতন, তাই দূরে থাকছি। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে গেলেও প্রশাসনের কেউ খোঁজ নিতে আসেনি।’’ আর সাতঘরিয়ার বাসিন্দারা জানালেন, ওঁরা সচেতন বলে আমবাগানে থাকছেন, কিন্তু একদল শ্রমিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা ছাড়াই গ্রামে ঢুকেছেন।

নরহাট্টা পঞ্চায়েতের প্রধান তাজিবুর রহমান অবশ্য বলেন, ‘‘শ্রমিকদের ছিলেন তাঁদের নিয়ম মেনেই খাবার দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তাঁরা প্রতিদিন মাছ-মাংস চাইছিলেন। তাঁরা নিজেরাই হোম কোয়রান্টিনে থাকবেন বলে জানালেন। আর এ দিন যাঁরা তেলঙ্গানা থেকে ফিরেছেন তাঁদের বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’

ইংরেজবাজার ব্লকের বিডিও সৌগত চৌধুরী বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

কিন্তু সূত্রের খবর, এখন জেলার যে বাসিন্দারা করোনা পজ়িটিভ, তাঁদের অধিকাংশেরই উপসর্গ দেখা দেয়নি। সেক্ষেত্রে এ রকম নীতি নিলে কী বিপদ আরও বাড়ছে না, প্রশ্ন বাসিন্দার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement