ফাইল চিত্র
করোনা-পরিস্থিতির মধ্যেই জেলার এক বিধায়কের কাছে গেল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার প্রতিনিধিদের ফোন। সেই ফোন পেয়ে প্রথমে কিছুটা হলেও চমকে গিয়েছিলেন ওই জনপ্রতিনিধি। সাংগঠানিক হরেক বিষয়ের পাশাপাশি করোনা মোকাবিলায় তিনি কতটা সক্রিয় রয়েছেন— তার খোঁজ নেওয়া হয় ফোনের ওপ্রান্ত থেকে।
মারণ-ভাইরাসের প্রতিরোধে তৃণমূলের নেতারা কতটা সক্রিয়, এ বার সেই খোঁজখবর শুরু করেছেন ‘পিকে’। সেই ফোনের জেরে জেলার অনেক নেতা, জনপ্রতিনিধিই এখন আরও বেশি সতর্ক। রেশনে অনিয়মের নালিশ ঠেকাতে নেতারা কী করছেন, এলাকার অসহায় মানুষেরা ত্রাণ ঠিকমতো পাচ্ছেন কিনা— সে সবের হদিস নেতাদের কাছেই নিচ্ছেন পিকে-র সংস্থার প্রতিনিধিরা।
তৃণমূল সূত্রে খবর, করোনা মোকাবিলায় দলের কোন কোন নেতা, জনপ্রতিনিধি কী ভাবে মানুষের পাশে থাকছেন— তার খোঁজ নিয়ে ‘রিপোর্ট কার্ড’ তৈরি করছে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা। আর তাতে জেলার অনেক নেতা ও জনপ্রতিনিধির রিপোর্ট খুব স্বস্তির নয়। তা নিয়ে সে সব নেতাদের সতর্কও করা হয়েছে।
শুধু জনপ্রতিনিধিই নন, নজর রাখা হয়েছে সরকারি কর্মচারীদের উপরেও। তাঁরা কেমন কাজ করছেন, কারও কাজে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ কিনা— সে দিকেও খেয়াল রয়েছে পিকে-র সংস্থার। রেশনে অনিয়ম ও কারচুপি নিয়েও তৈরি হচ্ছে রিপোর্ট। অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এমন কয়েক জন ডিলারের নামও পেয়েছেন পিকে-র প্রতিনিধিরা। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে সে সব ডিলারের সঙ্গে শাসকদলের স্থানীয় নেতাদের যোগাযোগের বিষয় নিয়েও। দলের অন্দরমহলের কানাঘুষো, করোনা বিপর্যয়ের সময়ে এমন কাজ কোনও কোনও নেতা ভাল ভাবে নিলেও, কেউ কেউ ক্ষুদ্ধও। তবে দলীয় শীর্ষ নেতৃত্বের ভয়ে সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন।
কাজের মানুষকেই সামনে আনতেই এই পদক্ষেপ বলে পিকের সংস্থা সূত্রে খবর মিলেছে।
জেলার একটি পুরসভার এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘আমার কাছে ফোন এসেছিল। নানা প্রশ্ন করা হয়। যা জানি সবই বলেছি।’’ জেলার এক বিধায়ক বলেন, ‘‘কোন এলাকায় দুঃস্থ মানুষের জন্য কী করা হয়েছে, রেশন সবাই ঠিকঠাক পাচ্ছেন কিনা, আমি কেমন কাজ করছি— এ সব জানতে চাওয়া হয়।’’
তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘করোনার আবহে জনপ্রতিনিধিরা কেমন কাজ করছেন সেই খোঁজখবর নিচ্ছেন পিকে-র প্রতিনিধিরা।’’