ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি সুভাষ রোডে দোকানের শাটার নামিয়ে নিয়মরক্ষার পুজো। নিজস্ব চিত্র
কেউ পুলিশের নজর এড়িয়ে দোকানে করলেন পুজো। কেউ পুজো করলেন বাড়িতে। অক্ষয় তৃতীয়ায় এমনই ছবি মালদহে। তবে পয়লা বৈশাখের মতো রবিবার অক্ষয় তৃতীয়াতেও হালখাতা হল না। নিয়মরক্ষায় পুজো করলেও, হালখাতা না হওয়ায় বকেয়া টাকা তুলতে না পেরে লকডাউনে আরও অসহায় জেলার একাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
লকডাউনের জেরে এ বার পয়লা বৈশাখে মালদহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে দোকানে পুজো বা হালখাতা করতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। অক্ষয় তৃতীয়ায় ভাল ভাবে পুজো করবেন বলে ভেবেছিলেন অনেকে। কিন্তু এখনও লকডাউন ওঠেনি। কয়েক জন ব্যবসায়ী দোকানের শাটার কোনও রকমে তুলে ভেতরে ঢুকে পুজো সারেন। পুজো চলাকালীন শাটার ভিতর থেকে নামানো ছিল, পুজো শেষে ফের শাটার খুলে বেরিয়ে যান তাঁরা। তবে হালখাতার বালাই ছিল না।
ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি সুভাষ রোডের স্বর্ণালঙ্কার ব্যবসায়ী মনোজ রায় দোকানেই পুজো করেন। ফি বছর তিনি অক্ষয় তৃতীয়ায় হালখাতাও করেন। কিন্তু এ বার তা হয়নি। মনোজ বলেন, ‘‘পুলিশ রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছিল। কিন্তু ভিতর থেকে শাটার নামানো থাকায় পুজো হচ্ছে তা বুঝতে পারেনি।’’ ইংরেজবাজার শহরের রাজমহল রোডের এক ব্যবসায়ী বাপি রায় বলেন, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম দোকানেই পুজো করব। কিন্তু পুলিশের টহলদারি দেখে আর ঝুঁকি নিইনি। বাড়িতেই ছোট করে নিয়মরক্ষার পুজো করেছি।’’ তিনি আরও বলেন,‘‘হালখাতা করতে পারেনি। ছোট ব্যবসা আমাদের। বেশ কিছু বকেয়া টাকা পড়ে আছে খদ্দেরের কাছে। হালখাতা না করতে পারায় সেই টাকাও আসল না ঘরে। লকডাউনে ব্যবসাও করতে পারছি না। ঘরে যা সম্বল ছিল তা দিয়েই কোনও রকমে ধুঁকে ধুঁকে চলছে সংসার।’’
মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘এ দিন কিছু ব্যবসায়ী দোকানের শাটার খুলে কোনও রকমে নিয়মরক্ষার পুজো করেছেন বলে শুনেছি। তবে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বাড়িতেই পুজো করেছেন। হালখাতা না করতে পারায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সমস্যা অনেকগুণ বেড়ে গেল।’’